নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– উন্নত পরিকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও রীতিমতো ঝুঁকি নিয়ে জটিল অস্ত্রোপচার করে মরনাপন্ন রোগীকে সুস্থ করে তুললেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার বিদ্যাসাগর পল্লীর বাসিন্দা শ্যামা বিশ্বাস গর্ভবতী ছিলেন। পেটে ব্যাথা নিয়ে গত লক্ষ্মীপুজোর দিন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। অন্যদিকে চিকিৎসকরা জানান শ্যামাদেবীকে যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন তার মরনাপন্ন অবস্থা। মর্টালিটি রেট ছিল জিরো। সুগার ছিল ৫৪০। এমনকি রোগীর হৃদস্পন্দনও ক্ষণিকের জন্য প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। রোগীকে CPR দিয়ে তাড়াতাড়ি অস্ত্রোপচারের জন্য অপারেশন টেবিলে তোলা হয়। রোগীর অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে কোন রক্ত পরীক্ষা বা পেটের ছবি করার সময় পাওয়া যায়নি। চিকিৎসকরা জানান রোগীর গর্ভপাত হয়ে গিয়েছিল। পেটের ভেতরই নষ্ট হয়ে গেছিল ভ্রূণ। দূষিত রক্ত জমতে শুরু করেছিল। হাসপাতালের যথেষ্ঠ উন্নত পরিষেবা না থাকা সত্ত্বেও জটিল অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা এবং অস্ত্রোপচার করে রোগীর পেট থেকে সাত বোতল রক্ত বের করেন। এরপর আইসিইউ-তে তাকে পর্যবেক্ষণে রেখে চলে চিকিৎসা ।
শ্যামাদেবীর শারীরিক জটিলতার বিষয়টি কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বিশ্লেষণ করে জানান, একজন মা জরায়ুতে বাচ্চা ধারন করেন এবং সেখানেই সে বেড়ে ওঠে। কিন্ত এই ক্ষেত্রে বাচ্চা জরায়ুর পরিবর্তে এসেছিল বাম দিকের ডিম্বনালিতে যা পরবর্তী সময়ে ফেটে গিয়ে পেটের ভেতর রক্তপাত হয়। এই অবস্থাকে মেডিকেল পরিভাষায় রাপচার এক্টোপিক প্রেগনেন্সি বলে।
বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন শ্যামাদেবী। লক্ষ্মী পুজোর দিন যে শ্যামাদেবীর অবস্থা মরনাপন্ন ছিল, ভাইফোঁটাই আগে তিনিই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। হাসপাতালের অন্য রোগী ও কর্মচারীদের মতে শ্যামা মায়ের কৃপাতেই জীবন ফিরে পেয়েছেন শ্যামাদেবী। পাশাপাশি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের কতর্ব্যরত চিকিৎসকদের সাহসী সিদ্ধান্তকেও সাধুবাদ জানাচ্ছেন সকলে।