নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– মুখ্যমন্ত্রীর মুখে ‘কচুরিপানা শিল্প’-র কথা শুনে যখন নেট দুনিয়ায় কটাক্ষেক ঝড় তখন এই কচুরিপানা শিল্পের মাধ্যমেই লক্ষ্মী লাভ করছেন আসানসোলের বার্নপুরের প্রায় কয়েক হাজার মহিলা। আর যার হাত ধরে এই লক্ষ্মী লাভ তিনি অদিতি সরখেল। তাঁর তৈরি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাত ধরেই কচুরীপানা শিল্পের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার মহিলারা।
প্রসঙ্গত গত এক বছর ধরে নদী পুকুর জলায়শয়ের বলতে গেলে আগাছা বলে পরিচিত কচুরিপানা দিয়ে ভ্যানিটি ব্যাগ,পার্স, কভার ফাইল, শৌখিন ফুলের টব সহ গৃহসজ্জার নানান সামগ্রী বাজারজাত করে চলেছে অদিতিদেবীর সংস্থা। আর ঘরে তুলছে লাভের কড়ি। আসানসোলের বার্নপুরে গড়ে উঠেছে এই কচুরিপানা শিল্পকে কেন্দ্র করে কুটির শিল্প। পুকুর বা জলাশয়ের থেকে নদীর কচুরিপানার গুনগত মান ভালো। তাই শহর সংলগ্ন দামোদর নদ থেকে সংগ্রহ করা হয় কচুরিপানা। তারপর তা রোদে শুকিয়ে আঁশ ছাড়ানো হয়। যাতে পচন না ধরে তার জন্যে বিশেষ রাসায়নিক দিয়ে কচুরিপানার মন্ড করা হয়। কভার ফাইল তৈরি করতে এই মন্ডের প্রয়োজন। অন্য ক্ষেত্রে শুকিয়ে যাওয়া কচুরিপানার আঁশ ছাড়িয়ে তা বুনে তৈরি হয় নানান সামগ্রী। একটি ব্যাগ তৈরিতে প্রায় এক মাস সময় লাগে।
সংস্থা সূত্রে জানা গেল প্রথমে কভার ফাইল দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিলো। কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে এই কভার ফাইলের ব্যাপক চাহিদা দেখেই অন্যান্য সামগ্রী তৈরি শুরু হয়। দামও সাধারণের নাগালের মধ্যেই। তাই হস্তশিল্প মেলাগুলিতে দারুন চাহিদা থাকে কচুরিপানা থেকে তৈরি এই সমস্ত সামগ্রীর। দিন দিন চাহিদা বাড়ায় দুর্গাপুরের প্রাণকেন্দ্র সিটিসেন্টারেও খোলা হয়েছে একটি শোরুম। অতিদিদেবী জানালেন, “শোরুমে ক্রেতা আসছেন খোঁজ করছেন, কিনেছেনও।”
অন্যদিকে এই সাফল্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই এসেছে বলে দাবি করছেন অদিতিদেবী। তাঁর মতে কাঁচা মালের সহজলভ্যতা ও সেভাবে কোনও খরচ না থাকায় সহজেই সাফল্য মিলেছে এই শিল্পে। তাই সবকিছু দেখেশুনেই ‘কচুরিপানা শিল্প’র কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যার ফলে একদিকে যেমন মানুষ পরিচিত হচ্ছেন এই শিল্পের সঙ্গে তেমনি ওই শিল্প সামগ্রীর প্রতি আগ্রহও বাড়ছে মানুষের।