নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– টোটোয় যাত্রীদের সঙ্গে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি প্রাপ্ত বয়স্ক হনুমান, অথচ যাত্রীরা ভয় পাচ্ছেন না। তারা নিশ্চিন্তে পৌঁছে যাচ্ছেন গন্তব্যে। হনুমানজীর অবশ্য কোনো গন্তব্য নেই। তিনি টোটোয় চড়তে ভালোবাসেন তাই টোটোয় চড়ে ঘুরে বেড়ান। আর এতে টোটো মালিকের কোনো আপত্তি তো নেই বরং তিনি মনে করেন স্বয়ং বজরংবলী কৃপা করে তার কাছে এসেছেন এবং তার ফলে তার কোনো সমস্যা তো হয়নি বরং আয় বৃদ্ধি হয়েছে। এমনই আশ্চর্যজনক ঘটনা নজরে পড়বে দুর্গাপুরের এক নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর এলাকায়। এখানে একটা বিষয় জানিয়ে রাখা জরুরি, এই হনুমানজী কিন্তু পোষ্য নন, তিনি ওই টোটো মালিকের কাছে ইচ্ছে মতো যাওয়া আসা করেন শুধু টোটো চড়ার জন্য।
রঘুনাথপুর এলাকার বাসিন্দা পেশায় ওই টোটো রিক্সার মালিক ও চালক মুকেশ দত্ত জানালেন, তাদের এলাকায় প্রায়ই হনুমানের দল আসে। কয়েকমাস আগে ওই দল থেকে একটি প্রাপ্তবয়স্ক হনুমান দল ছুট হয়ে যায় এবং এলাকায় সে একাই ঘোরাঘুরি শুরু করে। এলাকার বাসিন্দা সহ তিনিও তাকে খাবার খাওয়াতেন। একদিন তিনি যখন টোটো নিয়ে রোজগারের জন্য বের হচ্ছেন তখন ওই হনুমানটি হঠৎ করে তার টোটোর সিটের উপর বসে পরে। নানা ফন্দি ফিকির করেও হনুমানজীকে তিনি টোটোর সিট থেকে নড়াতে পারেননি। রীতিমতো চিন্তায় পড়ে যান তিনি। ভাবেন হনুমানের ভয়ে আর কোনো যাত্রী হয়তো তার টোটোয় চড়বেন না। কোনও উপায় না পেয়ে অবশেষে হনুমানটিকে টোটোয় করে এলাকায় এক চক্কর ঘোরাতে নিয়ে যান। আর তখনই তার ভুল ভাঙে। বাড়ি থেকে এলাকার প্রধান রাস্তায় যেতেই দুজন যাত্রী মিলে যায়। তারা নির্দ্বিধায় তার টোটোতে চড়ে বসেন এবং গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বলেন। আর আবাক করা বিষয় হল ওই হনুমানটিও যাত্রীদের বিরক্ত করেনি। সে ওই যাত্রীদের সঙ্গেই টোটোয় সফর করে। পরেরদিনও টোটো বের করতেই হনুমানটি আবারও মুকেশের টোটো রিক্সার উপর উঠে বসে। এদিন অবশ্য হনুমানজীকে তাড়ানোর কোনো চেষ্টা করেননি মুকেশ বরং তারপর থেকে এটাই প্রতিদিনের রুটিন হয়ে যায়। মুকেশের মতে ওইদিনের পর থেকে তার যাত্রীর অভাবতো হয়নি বরং কৌতুহলী যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে, আর তার সঙ্গে উপার্জনও বেড়েছে। এখন তো যাত্রী থেকে পথচারীরা সবাই বজরংবলীর কাছে নাথা নত করে আশীর্বাদও নেন।
টোটো চালক মুকেশ দত্তের দাবি, ওই হনুমানটিকে সঙ্গে নিয়ে টোটোর যাত্রা শুরু করলে তার বৌনিটাও বেশ ভালোই হয়। আর আশ্চর্যজনক হলেও এভাবেই মুকেশ ও বজরংবলীর সম্পর্ক দিন দিন আরও গাঢ় হচ্ছে।