নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– নভেম্বর মাস গুরু নানকের জন্ম মাস। মানব ধর্মকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম কারিগর গুরু নানকের জন্মমাস তাই পবিত্র মাস। আর এই পবিত্র মাসেই দানের মত মহৎ কার্য করার সিদ্ধান্ত নেয় দুর্গাপুরের ইস্পাত কলোনী স্থিত গুরু তেগবাহাদুর পাবলিক স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা। আর তাদের পাশে থেকে এই মহৎ কার্যে পড়ুয়াদের উৎসাহ দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ , শিক্ষক মন্ডলী ও অভিভাবকগন।
প্রথমে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের মধ্যেই চাল-ডাল সংগ্রহ করতে শুরু করে। তাতে সানন্দে যোগ দেয় শিক্ষক সহ অভিভাবকরাও। প্রথমে ঠিক হয় , সংগৃহীত চাল ডাল স্থানীয় কোনও লঙ্গরখানায় দান করা হবে। পরে সেই পরিকল্পনা পরিবর্তন করে দুঃস্থ মানুষদের খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় খুদে পড়ুয়ারা। ঠিক হয় কোন আদিবাসী গ্রামে গিয়ে দুঃস্থ মানুষদের সঙ্গে নিয়ে “গেট টুগেদার” করার। আর তাতে সায় দেয় শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকগণও।
যেমন ভাবা তেমন কাজ। সেইমতো শনিবার কাঁকসার আদিবাসী অধ্যুষিত বড়ডোবা গ্রামে ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে আয়োজিত হয় এক মিলনমেলা। যেখানে ছাত্রছাত্রীদের সংগ্রহ করা চাল-ডাল দিয়েই রেঁধে ফেলা হয় খিচুড়ি-সবজি। এদিন গ্রামের প্রায় ৬০০ লোককে সঙ্গে নিয়ে হৈ হৈ করে খাওয়া দাওয়া করে খুদে পড়ুয়ারা। যোগ দিয়েছিল স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও অভিভাবকরাও। তবে শুধু খাওয়া-দাওয়াতেই থেমে থাকেনি একেবারে অন্যরকম এই মিলন মেলা। গ্রামের শিশুদের হাতে পেন-পেন্সিল-ইরেজার সহ পড়াশুনার সামগ্রীও তুলে দেয় পড়ুয়ারা। এদিনের মিলন মেলা যেন আনন্দ মেলায় পরিণত হয়েছিল। মহৎ সেবা কার্য থেকে পাওয়া আনন্দ যেন ঝড়ে পড়ছিল খুদে খুদে পড়ুয়াদের চোখ মুখ দিয়ে।
গুরু তেগবাহাদুর স্কুলের অধ্যক্ষ সুতপা আচার্য্য রীতিমতো উচ্ছ্বসিত ও গর্বিত নিজের স্কুলেরই ছাত্রছাত্রীদের এই মহৎ উদ্যোগে সামিল হতে পেরে। তিনি জানান স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা যা করল,তা ভবিষ্যতের জন্য উদাহরন হয়ে রইল। ওদের মতোই “দান পরম ধর্ম” এই মন্ত্রে যদি ছোট থেকেই পড়ুয়ারা দীক্ষিত হয়, তবে এই পৃথিবী আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।