নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- গত বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে গরু চুরির নামে মারধরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করল কোকওভেন থানার পুলিশ। ধৃত দীপক দাসকে দুর্গাপুরের মহানন্দা পল্লী ও অনীশ ভট্টাচার্যকে আড়া বিধান পার্ক থেকে গতকাল রাতে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের আজ দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার বড়জোড়ার হাট আশুরিয়া এলাকা থেকে দামোদর ব্যারেজ হয়ে দুর্গাপুরে ঢুকেছিল একটি গরু বোঝাই পিকআপ ভ্যান। গাড়িটি গ্যামন ব্রিজ হয়ে মুচিপাড়া দিয়ে বিধাননগর হয়ে জেমুয়া যাওয়ার কথা ছিল। গাড়িটিকে গ্যামন ব্রিজের কাছে আটকায় বিজেপি কর্মীরা এবং অবৈধভাবে গরু পাচারের অভিযোগ তোলে। এরপর গাড়ি চালক ও গাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করার পাশাপাশি দড়ি বেঁধে কান ধরে উঠবোস করানো ও রাস্তা দিয়ে হাঁটানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপির যুব নেতা পারিজাৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বেশ কিছু বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে। যদিও পারিজাৎ দাবি করেছিলেন বিজেপি কর্মীরা নয় বরং স্থানীয়রাই ওই গরু পাচার রুখে দিয়ে পাচারকারীদের মারধর করেছে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে ওই দিন বিকেলে কোকওভেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে শুক্রবার কোকওভেন থানায় বিক্ষোভও দেখান তৃণমূলের কর্মীরা। অবশেষে এদিন রাতে পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের কথা জানান। পাশাপাশি পারিজাৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিন পুলিশ কমিশনার জানান, কৃষিকাজের জন্য দুর্গাপুরের জেমুয়া এলাকার কয়েকজন বাঁকুড়া থেকে গরু কিনে ফিরছিলেন। তখনই গরু পাচারকারী সন্দেহে তাদের উপর চড়াও হয় কয়েক জন ও মারধর করে এবং গরু গুলো গাড়ি থেকে নামিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ধরণের ঘটনা কোনোমতেই বরদাস্ত করা হবে না বলেও এদিন সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
অন্যদিকে এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ তুলে এদিন ক্ষোভ উগড়ে দেন দুর্গাপুরের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই। তিনি বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনা ঘটা ঠিক ছিল না। কিন্তু ঘটনা ঘটার পর যে রাজনীতি করা হচ্ছে , তার আমি বিরোধীতা করছি। বয়স্ক লোকের গায়ে হাত দেওয়া ঠিক কাজ হয়নি। চারিদিকে গরু চুরির খবর পাওয়া যাচ্ছে। কারা এই গরু চুরি করে পাচার হচ্ছে? কেন অবৈধভাবে হচ্ছে? কারা করছে? আর কারা মদত দিচ্ছে? এটা দেখার দরকার আছে। সেজন্য গাড়ি আটকানো হয়েছিল। কিন্তু তারপর যে ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক। তার নিন্দা করছি। তার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে বলবো হিন্দু মুসলিম নিয়ে খেলা খেলবেন না। দুর্গাপুরের মাটি শান্ত মাটি। মানুষ চায় না অশান্তি হোক। কিন্তু যা তৃণমূল কংগ্রেস করছে, তাতে দাঙ্গা লাগবে। আর তার জন্য দায়ী থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস।”





