eaibanglai
Homeএই বাংলায়দুর্গাপুরের ভয়াবহ বায়ুদূষণ নিয়ে উদ্বেগ

দুর্গাপুরের ভয়াবহ বায়ুদূষণ নিয়ে উদ্বেগ

নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- দুর্গাপুরের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি ক্রমাগত উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি সেন্টার ফর রিসার্চ ওন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার-এর একটি গবেষণায় এই চিত্র সামনে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত এই ছয় মাসে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বায়ু দুষণের মাত্রা দাঁড়িয়েছে পিএম ১০ এবং পিএম ২.৫। যা জাতীয় গ্রহণযোগ্য সীমার বহু গুণ বেশী। গবেষণার রিপোর্টে জানা গেছে পিএম ১০ এর গড় মাত্রা ছিল ১৪৬ µg/m³, যা গ্রহণযোগ্য সীমার চেয়ে ২.৪ গুণ বেশি। এই মাত্রা ১২৬ দিনের বেশি সময় ধরে বিপজ্জনক ছিল। পিএম ২.৫ এর গড় ছিল ৫০ µg/m³, যা নিরাপদ সীমা ৪০ µg/m³-এর চেয়ে অনেক বেশি। ৭১ দিন ধরে এই মাত্রা বিপজ্জনক পর্যায়ে ছিল।

প্রসঙ্গত পিএম (পার্টিকুলেট ম্যাটার) বলতে বোঝায় বাতাসে ভাসমান কঠিন কণা এবং তরল কণাগুলির মিশ্রণ। এই কণাগুলি বিভিন্ন উৎস থেকে আসতে পারে, যেমন – কলকারখানা, যানবাহন, নির্মাণ কাজ, এবং প্রাকৃতিক উৎস যেমন ধুলো ও ধোঁয়া। পিএম ১০ এবং পিএম ২.৫ দুটি প্রধান ধরনের পিএম যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পিএম ২.৫ কণাগুলির আকার ২.৫ মাইক্রোমিটার বা তার কম এবং পিএম ১০ কণাগুলির আকার ১০ মাইক্রোমিটার বা তার কম হয়ে থাকে। এই কণাগুলি শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে ফুসফুস এবং রক্ত ​​প্রবাহে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে, যেমন – শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, এবং ফুসফুসের ক্যান্সার ইত্যাদি।

এই পরিস্থিতিতে শিল্পাঞ্চলের দূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে একটি স্মারকলিপি জমা দিল দুর্গাপুর সাব-ডিভিশনাল স্পোর্টস অ্যান্ড কালচারাল ক্লাবস কো-অর্ডিনেশন সোসাইটি। পাশাপাশি স্মারকলিপির অনুলিপি কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য সচিব এবং পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান-এর কাছেও পাঠানো হয়। সংগঠনের তরফে শিল্প ও নির্মাণ খাতে কঠোর পরিবেশ বিধি প্রয়োগ, উন্মুক্তভাবে আবর্জনা পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং তার উপর নজরদারি, কন্টিনিউয়াস অ্যাম্বিয়েন্ট এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং স্টেশনের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি ঘোষ বলেন, “এই অবস্থা জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম আশঙ্কাজনক। আমরা স্মারকলিপিতে শুধু সমস্যার প্রতিবেদন তুলে ধরিনি, তার সমাধানের রূপরেখাও দিয়েছি। প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার জন্য আমরা প্রস্তুত।” পাশাপাশি তিনি শিল্পাঞ্চলের মানুষকে পরিবেশ রক্ষায় সংঘবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments