নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান : একাউন্ট থেকে ২ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার দায়ে ইস্পাত নগরীর নিউটন এভিনিউ থেকে ম্যানেজারকে ধরলো সিআইডি।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই স্থায়ী আমানত প্রকল্পে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের জমা রাখা প্রায় ২ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় ব্যাঙ্কের তৎকালীন ম্যানেজারকে এবার গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। ধৃতের নাম পিনাকি বিশ্বাস। দুর্গাপুর থানা এলাকার বি-জোনের নিউটন অ্যাভেনিউয়ে তার বাড়ি। বর্তমানে তিনি দুর্গাপুরে কর্মরত। ধৃতকে শনিবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন জানায় সিআইডি। যদিও ধৃতের আইনজীবী জামিনের সওয়ালে বলেন, “মিথ্যা মামলায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে ফাঁসানো হয়েছে। তাকে এক্ষুনি জামিন না দিলে তিনি চাকরি থেকে বরখাস্ত হবেন।” যদিও সিআইডি কম্পিউটার হার্ডডিস্ক উদ্ধারের প্রসঙ্গ তুলে ধৃতকে হেফাজতে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে আদালতে জানান। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ধৃতকে এদিন ৫ দিনের সিআইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিলেন সিজেএম।
সিআইডি’র একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের বড়বাজার এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় ২১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা স্থায়ী আমানত প্রকল্পে জমা রাখে বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি চিঠি নিয়ে সেখানকার কর্মী শেখ এনামূল হক ব্যাঙ্কে এসে টাকা তোলার জন্য কাগজপত্র জমা দেন। তা দেখে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাঙ্কের তরফে টাকা তোলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টাকা তোলার জন্য কোনও নথিপত্র জমা দেওয়া হয়নি বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই ব্যাঙ্কের সিনিয়র ম্যানেজার নেহা রাণি ঘটনার কথা জানিয়ে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি সামনে আসার পরই বিশ্ববিদ্যালয় জানতে পারে, শহরের জেলখানা মোড়ের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ঘটনার বছর দেড়েক আগে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৭৬ টাকা মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই তুলে নেওয়া হয়েছে। সেই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে জমা না পড়ে একটি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। সেখানেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের সই জাল করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। দু’টি ঘটনাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগের কর্মী ভক্ত মণ্ডল ও ঠিকাদার সুব্রত দাসের নাম জড়ায়। দ্বিতীয় ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার সুজিত চৌধুরী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।