নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- দুর্গাপুর সফরে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে উন্নয়নের পাঁচালি থেকে বাবরি মসজিদ তৈরি, নানা প্রসঙ্গে শাসক দল ও তাদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনায় সরব হলেন।
বুধবার সকালে কাঁকসার বাঁন্দরা এলাকায় সনাতনী ঐক্য মঞ্চের ডাকে অনুষ্ঠিত হয় চা চক্র ও পথসভা। সেখানে উপস্থিত হয়ে বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ, তৃণমূল সরকার থেকে শুরু করে মুসলিম সমাজকে নিয়ে রাজনীতি সবকেই নিশানা করেন।
গতকালই গত ১৫ বছরের উন্নয়নের সরাকির ক্ষতিয়ান পেশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার নাম দেওয়া হয় উন্নয়নের পাঁচালী। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের পাঁচালি প্রকাশ প্রসঙ্গে বিজেপির এই বরিষ্ঠ নেতা কটাক্ষের সুরে বলেন, “লালু প্রসাদ যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন তখন লালু চালিসা হয়েছিল। আর এখানে লক্ষ্মীর পাঁচালি না অলক্ষ্মীর পাঁচালী হচ্ছে। তার পরিণামও লালু প্রসাদের মতো হবে।” পাশাপাশি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়েও তাঁর গলায় কটাক্ষের সুর শোনা যা। তিনি বলেন,”স্কুল-কলেজ চালাতে না পারলে, হাসপাতাল বন্ধ করে দিলে আর মানুষের হাতে টাকা বিলি করলেই উন্নয়ন হয় না। মানুষের উপার্জনের সুযোগ তৈরি করাই আসল উন্নয়ন। যেসব দেশ শুধু টাকা বিলি করেছে, তারা ভিখারি হয়ে গেছে।”
অন্যদিকে গতকাল দুর্গাপুরের কোক ওভেন থানার অন্তর্গত বাঁকুড়া মোড়ে সনাতনী ঐক্য মঞ্চের তরফে একটি সভাতেও যোগদান তিনি। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে তাঁর বাবরি মসজিদ তৈরির বিতর্কিত মন্তব্যকে নিয়ে বিধায়ককে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন দিলীপবাবু। প্রথমে হুমায়ুন কবীরের দলবদলু ইমেজ নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, তাঁর হাত ধরেই হুমায়ুন কবীর বিজেপিতে এসেছিলেন, দু’বার টিকিটও পেয়েছিলেন। ভোটে হেরে আবার দল বদল করেছেন। এটাই ওনার চরিত্র,” দম থাকলে নিজের দল করে নির্বাচনে লড়ুন!তৃণমূলের সঙ্গে দরদাম করে লাভ নেই। সমাজের নেতা হতে হলে যোগ্যতা প্রমাণ করতেই হবে।” পাশাপাশি তাঁর বাবরি মসজিদ তৈরি নিয়ে চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, “আমরা বলছি নিজের জমিতে মন্দির মসজিদ গির্জা করো, আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বাবরের নাম নিলে আমরা প্রতিবাদের ঝড় তুলব। এখানে আক্রমণকারীর নামে মসজিদ হবে না। হিন্দুরা প্রতিবাদ করবে।”
প্রসঙ্গত সম্প্রতি এক সভা থেকে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ তৈরি করা হবে বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল কংগ্রেসের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যরাজনীতিতে।
অন্যদিকে মুসলিম সমাজের উন্নয়ন নিয়ে তিনি বলেন, “বাবরি মসজিদ তৈরি হলে মুসলিম সমাজের বিশেষ উপকার হবে না।” দেশের হাজার হাজার মসজিদের উদাহরণ টেনে মুসলিম সমাজকে নিয়ে রাজনীতি করা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “মুঘলদের ৭৫০ বছরের শাসনের পরও মুসলিম সমাজ কেন পিছিয়ে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিমদের শুধু ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করেন, উন্নয়ন করতে চান না।”
এই সভায় দিলীপ ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা সনাতনী ঐক্য মঞ্চের সদস্য সুমন্ত মন্ডল, অভিজিৎ দত্ত, কল্যান দুবে সহ অন্যান্যরা।

















