নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- দেশের মধ্যে একমাত্র বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বিমান নগরী, দুর্গাপুরের অন্ডাল বিমান নগরী। আর অন্ডালের এই কাজী নজরুল ইসলাম বিমান বন্দর নিয়ে সম্প্রতি কলকাতায় হয়ে যাওয়া বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে প্রশংসা করতে শোনা গিয়েছিল দেশের অন্যতম বানিজ্যিক সংগঠনকে। তার কিছু দিনের মধ্যেই সোমবার এই বিমানগরীর পরিকাঠামোগত নানা সমস্যায় সহ একাধি ইস্যুতে বর্ধমান দুর্গাপুরের সাংসদ কীর্তি আজাদ বৈঠক করলেন বিমান নগরী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে। অন্ডাল বিমান নগরীতে যারা জমি কিনেছেন তাদের নিয়েই গঠিত এই অ্যাসোসিয়েশন।
এদিন সিটিসেন্টারের একটি বেসরকারি হোটেলে আয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ ওই বৈঠকে অন্ডাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপায়ণ সহ বিমাননগরীর পরিকাঠামোগত সমস্যা যেমন,পথবাতি, জল নিকাশী ব্যবস্থা , পরিবহন ব্যবস্থা এমনকি সিন্ডিকেট রাজ নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
বৈঠক শেষে অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সঞ্জ পাল জানান সাংসদের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। সাংসদ সমস্যার কথা শুনেছেন এবং আগামী ৭-৮ তারিখের মধ্যে মুখ্য সচিবের কাছে পুরো বিষয়টি তুলে ধরে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যদিকে সাংসদ কীর্তি আজাদ বলেন, “সমস্যা আছে সুতরাং তার সমাধান করতে হবে। পুরে বিষয়টি নিয়ে যথাযোগ্য স্থানে কথা বলব এবং দ্রুত সমাধান করব। এই আশ্বাস দিচ্ছি।”
মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প অন্ডাল বিমান নগরীর আভ্যন্তরীন পরিকাঠামোর সমস্যা নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই অভিযোগ উঠছে। বিশেষ করে নিকাশী নালার সমস্যার জন্য গত বর্ষার মরশুমে অন্ডাল বিমান নগরী জলে ডুবে যায়। এছাড়াও মূল রাস্তা থেকে বিমান নগরীর বিভিন্ন দিকে প্রসারিত রাস্তাগুলিও এখনো পর্যন্ত ঠিকঠাক তৈরি করা যায়নি বলে অভিযোগ। যে কারণে অন্ডাল বিমাননগরীতে জমি কিনে বিনিয়োগের আশায় থাকা বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত সমস্যায় পড়ছেন। তাদের অভিযোগ বারবার বিএপিএল কর্তৃপক্ষকে বলেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
প্রসঙ্গত, এই বিমান নগরীতে বিমানবন্দরের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি শিল্প সংস্থা, আইটি পার্ক, বেসরকারি স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, পলিটেকনিক কলেজ, হোটেল, রেঁস্তোরা, আবাসন প্রকল্প, শপিং মল প্রভৃতি গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছিল বেসরকারি বেঙ্গল এরোট্রোপোলিশ প্রজেক্ট লিমিটেড (বিএপিএল)। এই বিমান নগরীতে রাজ্য সরকারের অংশীদারিত্বও রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিমান নগরীকে সামনে রেখে গোটা দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিনিয়োগ আনতে চাইছেন। বর্তমানে এই বিমানবন্দর থেকে
দিল্লী, মুম্বাই, চেন্নাই ব্যাঙ্গালোর, অসম ও ভুবনেশ্বর বিমান উঠানামা করে। এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নতি করতে হলে ও বিনিয়োগ আনতে হলে বিমানবন্দরের পরিকাঠামোগত ও অন্যান্য সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি আরও উন্নয়নেরও প্রয়োজন বলে মনে করছেন এখানের জমি ক্রেতাদের সংগঠন।
এদিনের বৈঠকে সাংসদ ও অ্যাসোসিয়েশনের পদাধিকারীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় ও বিমান নগরীর আধিকারিকরা।





