নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– সময় পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন হয়নি। বিরোধীরা বার বার নির্বাচনের দাবি করলেও তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। গত প্রায় তিন বছর হতে চলল ৫ সদস্যের প্রসাশক মণ্ডলী পুর নিগমের কাজ চালাচ্ছেন। এবার দুর্গাপুর নগরনিগমের এনক্যাপ (ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম) ফান্ড বন্ধ করল কেন্দ্র। নির্বাচিত পুর বোর্ড না থাকায় এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে। এর ফলে পুর এলাকার উন্নয়নের কাজ থমকে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে এই ফান্ডের টাকায় বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২০০টি রাস্তা তৈরির কাজ চলছে শহরের বিভিন্ন জায়গায়। কেন্দ্রীয় ফান্ড বন্ধ হয়ে গেলে এইসব রাস্তার কাজ কীভাবে সম্পূর্ণ হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ার পার্সন অনিন্দিতা মুখার্জি বলেন, “আমরা এখনো নোটিশ হাতে পাইনি, তবে আলোচনা করে দেখছি কি ব্যবস্থা করা যায় । যে রাস্তা গুলির শিলান্যাস হয়েছে সেগুলিতে কোন সমস্যা হবে না। আমরা পর্যাপ্ত ফান্ড রেখে তবে ওয়ার্ক অর্ডার করেছি। ফলে নগরবাসীর কোন সমস্যা হবে না। তবে চিন্তা এটাই আগামীতে নতুন করে কোনো কাজ শুরু করতে পারব কিনা সেটাই দেখার।”
তিনি আরও জানান, অর্থ কমিশন পুর উন্নয়নের জন্য ফান্ড পাঠায়। কিন্তু ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে কোনও ফান্ড আসেনি। তবে এনক্যাপ থেকে ৪৪ কোটি টাকা এসেছিল। সেই টাকায় লিফ সাকশন মেশিন, স্প্রিংকলার মেশিন, রোড সুইপিং-সহ একাধিক মেশিন কেনা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় বেহাল রাস্তা তৈরি হয়েছে। ফান্ডের টাকা ব্যবহারের জন্য ইসি (ইউটিলাইজেশন) সার্টিফিকেটও দিয়েছে কেন্দ্র। তবে কেন্দ্র সমস্ত ফান্ড বন্ধ করে দিলে উন্নয়নের কাজ থমকে যাবে। নতুন করে রাস্তাঘাট তৈরি, নিকাশি সমস্য়া, রাস্তার লাইট, পানীয় জল ইত্যাতি সমস্যা দেখা দেবে। সাধারণ মানুষকে কষ্ট না দিয়ে কীভাবে উন্নয়নের কাজ জারি রাখা যায় তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রে খবর এক্ষেত্রে রাজস্ব বৃদ্ধি করতে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের উপরে গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভাবছে পুরসভা। দপ্তরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “অনেকে বসত বাড়ির ট্যাক্স দিচ্ছে না। কিন্তু শহরে এমন বাড়ি প্রচুর রয়েছে, যেখানে নিচের তলায় দোকান রয়েছে। কেউ বাণিজ্যিক কর দেয় না। এদের চিহ্নিত করে হোল্ডিং ট্যাক্সের আয় বাড়াতে হবে।”
অন্যদিকে কেন্দ্রের ফান্ড বন্ধ নিয়ে পুরসভার দুর্নীতিকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা সুমন্ত মণ্ডল বলেন, “নগর নিগমে চরম দুর্ণীতি হচ্ছে, তাই ফান্ড বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। যদি নির্বাচন হতো তাহলে ফান্ড আটকাতো না।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে কলকাতায় এনক্যাপের একটি বৈঠকে পুরসভার প্রতিনিধিদের ডেকে ফান্ড বন্ধের কথা জানায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। দুর্গাপুর-সহ রাজ্যের মোট ১৬টি পুরসভায় এনক্যাপ (ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম) ফান্ড বন্ধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।





