eaibanglai
Homeএই বাংলায়হিংস্র হায়নার আতঙ্ক ইস্পাত নগরীতে

হিংস্র হায়নার আতঙ্ক ইস্পাত নগরীতে

নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুর:– শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর প্রথম থেকেই বিশাল জঙ্গলের এলাকা বলে চিহ্নিত ছিল। শিল্পায়নের সাথে সাথে জঙ্গল কেটে মানুষের জনবসতিও স্থাপন হয়। কিন্তু শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরে এখনো রয়ে গিয়েছে বেশ কিছু ছোট ছোট পুরাতন জঙ্গল এলাকা। বহু বন্যপ্রাণী এখনও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের আশেপাশে তাদের নিশ্চিন্তে ও নির্ভয়ে বসবাস করছে। বন্যপ্রাণীদের যে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল প্রিয় বাসস্থানের জায়গা তা বহুবার প্রমাণ হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে শিল্পাঞ্চলের আনাচে-কানাচে কখনো সজারু, কখনো শেয়াল, কখনো আবার বিরল প্রজাতির একাধিক বন্য জীবজন্তুর দেখা মিলেছে। এবার শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের ইস্পাত নগরীতে দেখা মিলল হিংস্র হায়নার।

গত কাল রাতে দুর্গাপুরের ইস্পাত নগরীতে একটি বিরল হায়নার মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের অ্যাটারিয়াল রোড এলাকায় স্থানীয়রা রাস্তার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় বড় আকৃতির বন্যজন্তুটিকে পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত এলাকায় এই খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে ভিড় জমে যায়। পরে জানা যায়, এটি একটি পূর্ণবয়স্ক হায়না, যার মৃত্যু পথ দুর্ঘটনার ফলে হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা মৃত হায়নাটিকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী বস্তিতে নিয়ে গেলে সেখানে কৌতূহলী মানুষের ভিড় আরও বাড়তে থাকে। ঘটনার খবর পেয়ে দুর্গাপুর বন বিভাগ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং হায়নার মৃতদেহ উদ্ধার করে। বনদপ্তরের কর্মীদের মতে, দুর্গাপুরের সংলগ্ন জঙ্গলে হায়না ও অন্যান্য বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে। তবে হায়নাটি কোনো দ্রুতগতির যানবাহনের ধাক্কায় মারা গেছে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট যানবাহন শনাক্তের চেষ্টা চলবে।

এলাকাবাসীর মধ্যে এ ঘটনায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মামনি বাস্কে বলেন, “আমরা প্রায়ই অজানা বন্যপ্রাণী দেখতে পাই, তবে সেগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারি না। আগে ভাবতাম শিয়াল, কিন্তু আজ বুঝলাম এটি হিংস্র হায়না। আমাদের ছেলেমেয়েরা জঙ্গলের ধারে খেলে, তাই এ ধরনের প্রাণীর উপস্থিতি নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। বনদপ্তর ও পুলিশের উচিত নজরদারি বাড়ানো।”

দুর্গাপুর বনদপ্তরের কর্মী সুমন দেব মল্লিক জানান, “খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে এটি পথ দুর্ঘটনার শিকার। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে, যাতে প্রকৃত মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করা যায়। পাশাপাশি, স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বনদপ্তরের তরফে এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”

এই ঘটনার পর বনদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় বন্যপ্রাণীদের চলাচলের উপর নজরদারি ও যানবাহনের গতিনিয়ন্ত্রণের দাবি উঠেছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments