নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বুক চিরে চলে গেছে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক। বহু পুরনো এই জাতীয় সড়ক আগে গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড নামে পরিচিত ছিল। এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন এবং দীর্ঘতম সড়কপথ। গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড (জিটি রোড) শের শাহ সুরি নির্মাণ করেছিলেন, যা বাংলাদেশের সোনারগাঁও থেকে শুরু হয়ে পেশোয়ার (বর্তমানে পাকিস্তানে) হয়ে আফগানিস্তানের কাবুল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। দুর্গাপুর শহরে এই জাতীয় সড়ক বরাবরই দুর্ঘটনা প্রবন। তবে যাত্রী নিরাপত্তা ও যাত্রা সুগম করতে ভোল বদলেছে এক নেলের সেই পুরনো জাতীয় সড়ক। বর্তমানে ছয় লেনের এই জাতীয় সড়ক। তবুও পরিস্থিতি বদলায়নি। জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা এখনও নিত্যদিনের ঘটনা।
বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ট্রাফিক বিভাগ। পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে শহরের মধ্যে ৮ টি জায়াগাকে দুর্ঘটনাপ্রবন বা ব্ল্যাক স্পট হিসেবে ঘোষণা করেছে ট্রাফিক বিভাগ। তার মধ্যে রয়েছে আরআইপি প্লট থেকে শুরু করে ইন্দো আমেরিকান মোড় পর্যন্ত জাতীয় সড়কের এলাকা। এলাকার ছোট বড় কারখানার অসংখ্য গাড়ির চাপই এই এলাকার দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। লেনিন সরণীর কারখানার গাড়িগুলি মুচিপাড়া দিয়ে জাতীয় সড়কে ওঠে এবং এমএমসি মোড়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়। অন্যদিকে সিটিসেন্টারে পিয়ালা কালী মন্দির সংলগ্ন এলাকায় প্রতিদিন শত শত মানুষ রাস্তা পারাপার করেন। অথচ এই এলাকায় নেই কোন না সিগন্যাল, জেব্রা ক্রসিং বা ওভাবব্রিজ। এদিকে ফরিদপুর ফাঁড়ির সামনে রাতুরিয়া, অঙ্গদপুর ও দুর্গাপুর মিশ্র ইস্পাত কারখানার গাড়ির ওঠানামার জায়গাটি ট্রাফিক বিশৃঙ্খলার অন্যতম কেন্দ্র। এছাড়া ভিরিঙ্গি চাষী পাড়া, ওল্ড কোর্ট মোড়, মেন গেট সব এলাকাই জাতীয় সড়কের একেবারে গা ঘেঁষে রয়েছে জনবসতি। দিনের বেলা হোক বা রাতে, এখানেও অবাধ পারাপারই দুর্ঘটনার মূল কারণ। একই চিত্র সামনে এসেছে গাপাল মাঠেও। মানুষ আর গাড়ির অবাধ যাতায়াত ও রাস্তা পারাপার বাড়াচ্ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
মঙ্গলবার দুপুরে এই ৮টি বিপজ্জনক এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন ডেপুটি কমিশনার ট্রাফিক পি. ভি. জি. সতীশ পশুমার্থী, এসিপি রাজকুমার মালাকার, ওসি সতীনাথ শীল ও সন্দীপ সোম সহ কমিশনারেটের ট্রাফিক আধিকারিকরা।
এলাকা পরিদর্শনের পর ডিসিপি ট্রাফিক জানান, দুর্ঘটনা রুখতে সবসমই সর্বোচ্চভাবে তৎপর রয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। তবে এই তৎপরতা আরও বাড়ানো হচ্ছে। কোথাও ডিসপ্লে বোর্ড, কোথাও অতিরিক্ত ট্রাফিক কর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে। এবং দুর্ঘটনা রুখতে বেশ কিছু কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

















