সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- দুর্গাপুরে মেডিক্যাল ছাত্রীর গণধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে ওড়িশার বিজেপি সাংসদের নেতৃত্ব প্রতিনিধি দল পৌঁছলে সাময়িক উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হল মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে। প্রতিনিধি দলকে কলেজে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সরব হয়ে ধর্ষণের ঘটনায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানান বিজেপি সাংসাদ।
এদিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ বালেশ্বরের বিজেপি সাংসদ প্রতাপ ষড়ঙ্গির নেতৃত্ব ওড়িশার বিজেপির প্রতিনিধি দল দুর্গাপুরে বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছয়। প্রতিনিধি দলে ওড়িশার তিন বিজেপি বিধায়ক, রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী সহ ৩৫ জন ছিলেন। তাদেরকে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। আগে থেকেই হাসপাতাল চত্বরে লোহার গার্ডওয়েল দিয়ে ব্যারিকেড করে রাখা হয়েছে। এরপরই দুপক্ষের মধ্যে বচসা ও কথা কাটাকাটি শুরু হয়। বিজেপি সাংসদ বলেন, “আমরা সব জায়গায় জানিয়ে এসেছি। কেন আমাদেরকে আটকানো হচ্ছে?” পরে অবশ্য বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী সহ ১০ জনকে হাসপাতালে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়।
পরে বিজেপি সাংসদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলায় জঙ্গলরাজ চলছে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য প্রশাসনকে তুলোধুনা করেন। তিনি বলেন, “নির্যাতিতা ডিপ্রেশনে আছে। একইসাথে সে শারীরিক ও মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। এই ঘটনা নৃশংস, পৈশাচিক, জঘন্যতম। অথচ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। একজন মহিলা হয়ে তিনি এমন করতে পারেন? তিনি বলছেন সাড়ে বারোটার সময় এই ঘটনা ঘটেছে। অথচ, তা একেবারেই ঠিক নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছেন, রাত আটটা নাগাদ ওই ছাত্রী বেরিয়েছিলো। আরো জেনেছি, হোস্টেলে ঢোকার শেষ সময় রাত দশটা। অর্থাৎ সে কলেজের পারমিশেবল টাইমের মধ্যেই বেরিয়েছিলো। এর থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কোনরকম সংবেদনশীলতা নেই।”
অন্যদিকে দুর্গাপুরের এই ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এদিন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুইয়ের নেতৃত্বে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ ভবনের সামনে রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার এবং সাংসদ কীর্তি আজাদের সন্ধান চেয়ে পোস্টার সাঁটিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। তৃণমূলের মন্ত্রী ও সাংসদের মানবিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে লক্ষণ ঘড়ুই বলেন,”ওই হাসপাতাল এলাকা মন্ত্রী এবং সাংসদদের। কিন্তু দুর্গাপুরে এত বড় কাণ্ড হয়ে গেল,তাঁদের খুঁজে পাওয়া গেল না। সেই জন্যই আমরা দুজনের সন্ধান চেয়ে পোস্টর দেওয়া হয়েছে।”
এদিকে বিজেপির পোস্টার সাঁটানো ও বিক্ষোভ নিয়ে পাল্টা জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ তৎপর। অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলেছেন। বিজেপি এই ঘটনাকে নিয়ে রাজনীতি করছে।”