নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- বৃহস্পতিবার সিটিসেন্টারে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের দফতরের সামনে ধর্নায় বসে বিক্ষোভ দেখালেন দুর্গাপুর উর্বশী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ লটারির মাধ্যমে তাঁরা জমি পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করলেও দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর ধরে তাদের সেই প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অথচ এডিডিএ অবৈধ ভাবে অন্যদের জমি দিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ।
দুর্গাপুর উর্বশী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি রাজু দে জানান ২০১০ সালে দুর্গাপুরের সিটিসেন্টারে বসবাস যোগ্য জমি বিক্রির জন্য লটারির ব্যবস্থা করেছিল এডিডিএ কর্তৃপক্ষ। সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেই লটারি বিতরণ করা হয়। তখন প্রায় ১৫০০জন লটারির মাধ্যমে জমি পাওয়ার জন্য নির্বাচিত হন এবং প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা দিয়ে জমির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু ২০১১ সালে রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই জমি বিলি নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়। প্রথমে ওই জমিবিলি পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বাতিল করার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। অবশেষে বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন জমির আবেদনকারীরা। প্রথমে দুর্গাপুর মহকুমা আদালত, তারপর বর্ধমান আদালত অবশেষে সেই মামলা পৌঁছয় কলকাতা উচ্চ আদালতে। এর মধ্যে ওই জমি বিলি নিয়ে এডিডিএ-এর বিরুদ্ধে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ মামালা করলে তা আরও জটিল ও প্রলম্বিত হয়।
রাজুবাবুর দাবি এডিডিএ চাইলেই বিষয়টি মিটিয়ে নিয়ে যথাযথাভাবে জমি বিলির ব্যবস্থা করতে পারে। কিন্তু বর্তমান সময়ে ওই জমি বিক্রি করলে অনেক বেশি টাকা পাওয়া যাবে, তাই পুরনো যোগ্য জমি প্রাপকদের জমি দিতে চাইছে না সরকারি এই সংস্থাটি।
অন্যদিকে সেই সময় যারা জমি পাওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তাঁদের বেশীরভাগই চাকরিজীবী। কেউ প্রাইমারি স্কুলের টিচার, কেউ হাই স্কুলের টিচার, কেউ ক্লার্ক বা অন্য পেশার মানুষজন। বর্তমানে তাঁদের অধিকাংশই অবসর গ্রহণ করেছেন। সকলেরই দরকার মাথার উপর ছাদ, এক টুকরো আস্তানা। এদিকে ওই জমি সংক্রান্ত মামলার নিষ্পিত না হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী অন্য কোনো সরকারি সংস্থার মাধ্যমে জমির জন্য আবেদনও করতে পারছেন না তাঁরা। ফলে রীতিমতো হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে তাঁদের। তাই এবার বিষয়টি নিয়ে এডিডিএ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন জমি আবেদনকারীরা। যোগ্য প্রাপকদের জমি দেওয়ার ব্যবস্থা করা না হলে আগামী দিনে আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।