নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- দামোদরের ড্রেজিং নিয়ে ডিভিসি তথা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়ে দুর্গাপুরে একযোগে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল রাজ্যের তিন মন্ত্রী। যার পাল্টা হিসেবে বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচি।
প্রসঙ্গত, দামোদরের ড্রেজিং নিয়ে সম্প্রতি সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ পুজোর সময় উৎসবের মরশুমে পশ্চিম বর্ধমান ও ঝাড়খণ্ডে লাগাতার ও ভারী বৃষ্টির জেরে একাধিক বাঁধ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। তার জেরে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। যা নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী, ইচ্ছাকৃকভাবে বন্যাপরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। যদিও ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জানায় অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে নদী বাঁধগুলিতে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় জল ছাড়া প্রয়োজন ছিল। এরপরই নদীবঙ্গে পলি জমায় বার বার বন্য়া পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিভিসির উদাসীনতাকে দায়ী করেন তিনি। এবার সেই ইস্যুতে সরব হলেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী। সেচমন্ত্রী মানষ ভূঁইয়া, আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং পঞ্চায়েত-গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার একজোট হয়ে শুক্রবার দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের অফিস ঘেরাও করে অবস্থান বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে মন্ত্রী মানষ ভূঁইয়া সরাসরি কেন্দ্রকে আক্রমণ করে বলেন, “কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ভেঙে দিয়েছে। দামোদরের ওপর সাতটি ড্যাম হওয়ার কথা ছিল, হয়েছে মাত্র পাঁচটি। তেনুঘাট এখনো ঝাড়খণ্ড সরকারের দখলে। কেন্দ্র শুধু রিপোর্ট দেখছে, ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এখনই ড্রেজিং না হলে দামোদর হয়ে উঠবে মৃত্যুফাঁদ।”
অন্যদিকে আইন ও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক সরাসরি ডিভিসি ও কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলে ক্ষোভের সুরে বলেন, “যেদিন থেকে দামোদরের উপর ড্যাম তৈরি হয়েছে, সেদিন থেকে একবারও ড্রেজিং হয়নি। পলি জমে নদের জলধারণ ক্ষমতা এখন তিন ভাগের একভাগে নেমে এসেছে। ফলে সামান্য জল উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে ডাউনস্ট্রিমে নামলেই মাইথন আর পাঞ্চেতকে ছাপিয়ে প্লাবন নামে। মারা যাচ্ছে মানুষ, গবাদি পশু, ডুবে যাচ্ছে চাষের জমি।” একই সুরে মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “কেন্দ্রীয় বঞ্চনা আর উদাসীনতার প্রতিবাদেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে।”
অন্যদিকে তৃণমূলের এই বিক্ষোভ কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে এদিন দুর্গাপুর ব্যারেজের সামনে বিক্ষোভে প্রদর্শন করে বিজেপি কর্মীরা। তারা অভিযোগ করেন তৃণমূল সরকার ইচ্ছে করে ব্যারেজ ভাঙার চেষ্টা করছে। আর এই অভিযোগকে কটাক্ষের সুরে উড়িয়ে দেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি বলেন,“আগে পলি তুলে ব্যারেজের সংস্কার করুন, তারপর আন্দোলনের কথা বলুন। ফাইল নিয়ে রাজনীতি করলে দামোদর সবাইকে গিলে ফেলবে।”
সব মিলিয়ে দামোদরের ড্রেজিং নিয়ে শহরে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা।





