নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- শীতের ভোরের কুয়াশা মেখে সবুজের বার্তা নিয়ে শহরের জন্য দৌড়। সবুজ নিধন বন্ধ করে শহর দুর্গাপুরকে দুষণমুক্ত করার বার্তা দিতে শনিবার সকালে অনুষ্ঠিন হল ম্যারাথন “রান ফর এনভায়রনমেন্ট”। ডিএসএমএস (দুর্গাপুর সোসাইটি অফ ম্যানেজমেন্ট সাইন্স) কলেজের উদ্যোগে ও দুর্গাপুর সাব ডিভিশনাল স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং দুর্গাপুর রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় ১০ কিলোমিটার এই দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ম্যারথনের স্লোগান ছিল “পলিউশন ফ্রি, সলিউশন ট্রি।”
এদিনের ম্যারথনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ভিন রাজ্যের প্রতিযোগীরাও অংশগ্রহণ করেছিলেন। ডিএসএমএস কলেজ ক্যাম্পাস থেকে দৌড় শুরু হয় এবং বিধাননগরের ১০ কিমি পথ অতিক্রম করে ফের কলেজ প্রাঙ্গনেই শেষ হয় দৌড়। এদিনের ম্যারথনে পুরুষ ও মহিলা উভয়েই অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রতিযোগিতা শেষে জয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। প্রথম স্থানাধিকারীকে ৩০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় স্থানাধিকারীকে ২৪ হাজার টাকা , তৃতীয় স্থানাধিকারীকে ১৮০০০ টাকা, চতুর্থ স্থানাধিকারী ১২০০০ হাজার টাকা, এবং ১২ জনকে ২০০০ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হয়। এদিন মোট দু লক্ষ টাকার নগদ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়াও প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীদের জন্য ছিল সার্টিফিকেট, মেডেল ও টি শার্ট। কলেজের তরফে প্রতিযোগীদের জন্য খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।
এদিনের এই বিশেষ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক ডঃ সৌরভ চ্যাটার্জি। তিনি ডিএসএমএস কলেজের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, “শহরকে দুষণমুক্ত করার বার্তা দিতে গত দু’বছরের মতো এবছরও ম্যারাথন দৌড়ের আয়োজন করেছে ডিএসএমএস। খেলাধুলার মাধ্যমে দুষণমুক্ত প্রকৃতির বার্তা বিশেভাবে উল্লেখযোগ্য। এইভাবেই সমাজের মধ্যে দুষণমুক্ত পরিবেশের বার্তা ছড়িয়ে পড়বে।”
অন্যদিকে ডিএসএমএস কলেজের অন্যতম কর্ণধার শিউলি মুখার্জি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “প্রকৃতি নিধন করে উন্নয়ন কখনই কাম্য নয়। উন্নয়নের জন্য পরিবেশের অনেকটাই ক্ষতি হয়। বর্তমানে শহরে নতুন রাস্তাঘাট তৈরি করতে অনেক গাছ কাটা হচ্ছে। শহরে ইতিমধ্যে যে গাছ কেটে ফেলা হয়েছে নতুন ভাবে চারা গাছ রোপন করে পরিবেশকে পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে আনতে অন্তত আগামী বিশ বছর লেগে যাবে। এভাবে সবুজ নিধন যজ্ঞ চলতে থাকলে আগামী বছর গুলো শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশ খুব একটা ভালো জায়গায় থাকবে না, বরং দুষণ বাড়বে। তাই শহরবাসীকে সচেতন হতে হবে।”
সব মিলিয়ে এই ম্যারাথন প্রতিযোগিতা শীতের কুয়ামাখা ভোরে শহরের বুকে এক নতুন উন্মাদনা তৈরি করেছিল। যা একদিকে যেমন শহরকে ভালোবেসে তার প্রকৃতিকে রক্ষা করার বার্তা দিল তেমনি স্বাস্থ্যই যে সম্পদ তাও একবার মনে করিয়ে দিল।