নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– সিবিএসসির দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৯.২ শতাংশ নম্বর পেয়ে দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থান লাভ করেছে দুর্গাপুরের সিএমইআরআই কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের পড়ুয়া সম্পৃক্তা দত্ত। তাক লাগানো রেজাল্ট করেও পাদ প্রদীপের তলায় থেকে গিয়েছে মেধাবী এই ছাত্রীটি। রাজ্য সরকারের তরফে কৃতী ছাত্র ছাত্রীদের সংবর্ধিত করা হলেও সম্পৃক্তা কোনো অজানা কারণে তার থেকে বাদ পড়ে গেছে। স্কুলের তরফেও তাদের ছাত্রীর এই সফলতা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রসঙ্গত এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের সিবিএসই দশম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষা ফল প্রকাশিত হয় গত ১৩ মে। তাতে দেখা যায় দেশের মোট ২৪.১২ লক্ষ শিক্ষার্থীর মধ্যে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে দুর্গাপুরের সম্পৃক্তা। তার এই সাফল্য যে আগামী প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবুও ফল প্রকাশের পর একমাস কেটে গেলেও দুর্গাপুরের এই মেধাবী ছাত্রীটি লাইম লাইটে আসেনি। স্কুল, সরকারি বেসরকারি কোন সংগঠন তাকে সংবর্ধনা জানাতে এগিয়ে আসে নি। অথচ কোনরকম প্রাইভেট টিউশন ছাড়া নিজের অদম্য সাধনায় এই সাফল্য অর্জনের কাহিনী রীতিমতো অনুপ্রেরণাদায়ী।
সম্পৃক্তার বাবা সিআইএসএফ-এ কর্মরত। কোন্নগরের আদি বাড়ি হলেও বর্তমানে সেইল কো-অপারেটিভ এলাকার গোষ্ঠগোপাল বীথির বাসিন্দা দত্ত পরিবার। সম্পৃক্তার জন্মও দুর্গাপুরেই। দুর্গাপুরের সিএমইআরআই কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকেই পড়াশুনা শুরু তার। ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্রী হিসেবেই পরিচিত স্কুলে। সেই ধারা বজায় রেখে কোনো রকম টিউশন ছাড়াই, স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সহযোগিতায় ও নিজের চেষ্টায় দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ৫০০-এর মধ্যে ৪৯৬ ( ৯৯.২ শতাংশ ) নম্বর পেয়ে সকলকে চমকে দিয়েছে সে। অথচ সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কাগজে স্বীকৃতি মিললেও এই মেধাবী ছাত্রীটি শিক্ষানুরাগী শিল্পাঞ্চলের মানুষজনের কাছ থেকে সামান্য সংবর্ধনাটুকুও পায়নি।
সম্পৃতার মা পুতুল দত্তের কথা ধরা পড়ল অভিমানের সুর। তিনি জানান, এই শিল্পাঞ্চলের মাটিতে লালিত পালিত হয়েছে তাঁর মেয়ে। তাই এই সাফল্য শুধু সম্পৃতার নয়, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলেরও। সেক্ষেত্রে এই শিল্পাঞ্চলের মানুষজনের আশীর্বাদেই তাঁর মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবন সফল হয়ে উঠুক এই কামনা করেন তিনি।
বর্তমানে বিজ্ঞান নিয়ে সিএমইআরআই কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়েই একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে সম্পৃক্তা। আগামীদিনে ডাক্তার হয়ে মানুষজনের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার ইচ্ছা তার। এতবড় সাফল্যের পরও কোনোরকম অভ্যর্থনা,সংবর্ধনা না পেলেও দমে যায়নি শিল্পাঞ্চলের এই মেধাবী ছাত্রীটি। মা-বাবা, শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ শিল্পাঞ্চলের মানুষজনের আশীর্বাদ পাথেয় করে আগামী দিনে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়েছে সে।





