eaibanglai
Homeএই বাংলায়দুর্গাপুরে সিটু নেতাকে কাজে যোগ দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে,...

দুর্গাপুরে সিটু নেতাকে কাজে যোগ দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে, বিতর্ক

নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- ধর্মঘটে নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে বাম-তৃণমূল বিবাদ। সিটু নেতাকে কাজে যোগ দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। যা নিয়ে শিল্পশহর দুর্গাপুরে শুরু বিতর্ক। প্রয়োজনে কারখানার সামনে আন্দোলনের হুমকি বিজেপি ও সিটুর। অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূল নেতার। প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে, দাবি. তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতির।

প্রসঙ্গত চলতি মাসের গত ৯ তারিখ কেন্দ্রীয় শ্রম কোড বাতিলের দাবিতে সারা ভারত সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ১০ টি শ্রমিক সংগঠন এবং শিল্প ফেডারেশন। দুর্গাপুরে ধর্মঘটে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সিপিএম শ্রমিক সংগঠন সিটুর জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সিদ্ধার্থ বসু। তিনি দুর্গাপুরের লেনিন সরণির বেসরকারি ইস্পাত কারখানার একজন স্থায়ী কর্মী। অভিযোগ ধর্মঘটের পর গত ১০ তারিখ থেকে তিনি কাজে যোগ দিতে পারছেন না। তাকে বার বার কারখানা থেকে বার করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি ৩নম্বর ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি রিন্টু পাঁজা ও তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নিয়ে তাকে কাজে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় বলেও দাবি করেছেন সিটু নেতা সিদ্ধার্থ বসু।

সিদ্ধার্থবাবু এদিন একটি সাংবাদিক বৈঠক করে পুরো বিষয়টি সামনে আনেন। তিনি বলেন, “গত ১০ তারিখ আমি কাজে যোগ দিতে যাই। তখনই তৃণমূলের বেশ কয়েকজন আমাকে বলে রিন্টু পাঁজার আর জেলা তৃণমূলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর অনুমতি ছাড়া কারখানায় ঢুকতে দেওয়া যাবে না। ওই কারখানারই কর্মী তৃণমূলের সাথে যুক্ত পুকাই, শ্রীকান্ত, প্রণব পাল, সাগর গড়াই সহ বেশ কয়েকজন আমাকে বারে বারে বলছে রিন্টু পাঁজা আর জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কাছে চিঠি লিখে আনতে। আমরা ইতিমধ্যেই জেলাশাসক মহকুমা শাসক ও পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। ভবিষ্যতে এই ঘটনা ঘটতে থাকলে আমরা আন্দোলনের পথে হাঁটবো।”

ঘটনার প্রতিবাদ করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বও। জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”সমস্ত রাজনৈতিক দল নিজের নিজের মতামত রাখবে এটা অধিকার। কিন্তু রাজনৈতিক আন্দোলনে নেমেছে বলে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হবে না এগুলোর বিপক্ষে আমরা। দ্রুত তাকে কাজে যোগ যোগ দিতে না হলে আমরা কারখানার গেটের বাইরে বিক্ষোভে নামবো।”

অন্যদিকে যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সেই তৃণমূল নেতা তথা ৩নম্বর ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি রিন্টু পাঁজা অবশ্য সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে করে দাবি করে বলেন, “হয়তো কারখানায় কোন খারাপ কাজ করেছে সেজন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ ঢুকতে দিচ্ছে না। সবার জন্য দরজা খোলা আছে। আমাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করে কোন লাভ নেই।”

এদিকে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”ছুটি নিয়ে যে কেউ ধর্মঘটে যোগ দিতে পারেন। তারপরেও কারো উপর যদি কেউ আক্রমণ করেন তাহলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন নিরপেক্ষ। যদি সিদ্ধার্থ বাবু প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করে থাকেন তাহলে ভরসা রাখুন প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য দুর্গাপুরের বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানায় গত কয়েক বছরে তৃণমূল শ্রমিক নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তীব্র আকার নেওয়ায় সম্প্রতি শ্রমিক সংগঠনে সভাপতির পদের বিলোপ ঘটিয়ে কোর কমিটি ঘোষণা করে দল। কোর কমিটি গঠনের পর বৈঠক করে দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন “কোর কমিটিই এবার থেকে দুর্গাপুরের শ্রমিক সংগঠন পরিচালনা করবে। কোন অনৈতিক কাজের সাথে যদি কোন নেতা জড়িত থাকেন তাহলে সোজা প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে অভিযোগ জানান।” পাশাপাশি দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর জন্য টোল ফ্রি নাম্বারও চালু করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। তারপরও দলের শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments