নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- আজ ১৩ই আগস্ট বিশ্বজুড়ে পালিত হয় নেকড়ে দিবস। বর্তমানে দূষণ,বন কেটে নগরায়ণ সহ নানা কারণে এই প্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। যা প্রাকৃতিক ভারসম্যাকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই নেকড়ে সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই দিনটি পালন করা হয়।
কয়েক দশক আগেও জঙ্গলে ঘেরা দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে সন্ধ্যা নামলেই শোনা যেত হায়না নেকড়ে শিয়ালের মতো বন্য জীব জন্তুর ডাক। কিন্তু নগর উন্নয়ন আর দূষণের জেরে এখন সেসব অতীত। তবে বর্তমানে এই নেকড়ে ও বন্য়প্রাণী সংরক্ষণে বনদপ্তরের সাথে হাত মিলিয়ে যৌথভাবে তৎপরতার সাথে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উইংস। বিশ্ব নেকড়ে দিবসে এই সংগঠনের উদ্যোগে সিটিসেন্টারের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে বিপন্ন নেকড়ে নিয়ে জনমানসে সচেতনতার উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হয়েছিল ‘নেকড়ে বাঁচাও’ কর্মশালার। যেখানে সংগঠনের সদস্যরা তুলে ধরেন বাস্তুতন্ত্রে নেকড়ে ও হায়না সহ বন্যপ্রাণীদের ভূমিকার কথা। যা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শিল্পায়ন, খনির সম্প্রসারণ ও মানুষের অনুপ্রবেশে তাদের বাসস্থান ক্রমশ কমছে। এদিনের কর্মশলারা মূল বার্তা ছিল,যদি এই প্রাণীরা হারিয়ে যায়, তবে হারিয়ে যাবে বনের প্রাণও। বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাবে মানব সভ্যতাও। তাই মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সহাবস্থানের পথই সকলের বেঁচে থাকার একমাত্র উপায়।
যদিও বনদফতরের তরফে জানানো হয়, কাঁকসার মলানদিঘির বিষ্ণুপুরের জঙ্গলে নেকড়ের প্রজনন বাড়ছে। দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের মাধাইগঞ্জের জঙ্গলেও দেখা যাচ্ছে সেইসব প্রজাতির নেকড়ে। সেখানে ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে ক্যামেরা বসিয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। উইংসের সদস্যরাও এই ক্যামেরার মাধ্যমে তাদের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। বনদফতরের বাড়তি নজরদারি ও উইংসের গবেষণা এই বিপন্ন প্রাণীদের রক্ষায় নতুন আশা জাগাচ্ছে।
এদিনের এই বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণবঙ্গের মুখ্য বন সংরক্ষক বিদ্যুৎ সরকার, দুর্গাপুর বন বিভাগের বনাধিকারিক অনুপম খান, বর্ধমান বন বিভাগের ডিএফও সঞ্চিতা শর্মা, দুর্গাপুর বনাঞ্চলের রেঞ্জার সুদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বনদপ্তরের সমস্ত আধিকারিকরা।





