এই বাংলায় ওয়েব ডেস্কঃ– আগামীকাল অর্থাৎ ৭ ডিসেম্বর মার্গশীর্ষ পূর্ণিমা। অগ্রহায়ন মাসের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমা যা আবার ভগবান দত্তাত্রেয়ের প্রকাশ বা দত্তাত্রেয় জয়ন্তী হিসেবে পালিত হয় প্রতি বছর। হিন্দু শাস্ত্র মতে, দত্তাত্রেয়কে সমস্ত তান্ত্রিক গ্রন্থের রচয়িতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। এমনকি ভগবান দত্তাত্রেয়ের আরাধনা করলে সকল তান্ত্রিক সাধনায় খুব সহজেই সিদ্ধিলাভ করা যায় ও আশাতীত ফল মেলে বলে মান্যতা রয়েছে। মূলত অমাবস্যাতে তন্ত্র সাধনা করা হলেও এই দত্তাত্রেয় জয়ন্তী বা মার্গশীর্ষ পূর্ণিমা তন্ত্র সাধকদের জন্য একটি বিশেষ দিন। বিশেষ করে এই দিনে তন্ত্র সাধনায় সিদ্ধ হয়ে নানা রকম শক্তি অর্জন করা যায় এবং সেই শক্তি প্রয়োগ করে মানুষের নানা মনোকামনা যেমন পূর্ণ করা যায় তেমনি কারও ক্ষতিও করার মনোকামনায় পূর্ণ হয় বলে মান্যতা রয়েছে।
ভগবান দত্তাত্রেয়কে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব- এই ত্রিমূর্তির সম্মিলিত রূপ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও তাঁকে বিষ্ণুর অবতার হিসেবেই গণ্য করা হয়। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, দত্তাত্রেয় হলেন ঋষি অত্রি ও তাঁর স্ত্রী অনুসূয়ার পুত্র। অনসূয়া ছিলেন ধর্মপ্রাণ নারী। তিনি ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবের সমতুল্য পুত্র লাভ করার জন্য কঠোর তপস্যা করেছিলেন। ভগবান বিষ্ণু সেই ইচ্ছা পূরণের জন্য মহর্ষি অত্রি এবং মা অনুসূয়ার পুত্র হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর নাম ছিল দত্ত এবং মহর্ষি অত্রির পুত্র হওয়ায় তাঁকে আত্রেয় বলা হয়, এইভাবে দত্ত ও আত্রেয় মিলনের মাধ্যমে দত্তাত্রেয় নামটি তৈরি হয়। তাঁকে সকল তান্ত্রিক ধর্মগ্রন্থের প্রবর্তক এবং শিক্ষকদের গুরু বলে বিবেচিত করা হয়। তিনি প্রসন্ন হলে ভক্তের প্রজ্ঞা, জ্ঞান, শক্তি ও সম্পদ লাভ হয় এবং তার সমস্ত শত্রুরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরাজিত হয়।
সারা ভারতে বিশেষত দক্ষিণ ভারতে দত্তাত্রেয়ের একাধিক মন্দির রয়েছে। কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও গুজরাটের দত্তাত্রেয় মন্দিরগুলিতে দত্তাত্রেয় জয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ উৎসব হয়। কর্ণাটকের মানিকনগরের মানিকপ্রভু মন্দিরে একাদশী থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত মোট সাত দিন ধরে দত্তাত্রেয় জয়ন্তী পালিত হয়। সারা দেশ থেকে বহু তীর্থযাত্রী এই সময় এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন।
দত্তাত্রেয় জয়ন্তী – ৭ ডিসেম্বর ২০২২ (বুধবার)
পূর্ণিমার তারিখ শুরু – ৭ ডিসেম্বর ২০২২ সকাল ৮.০১ টায়
পূর্ণিমা তিথি সমাপ্তি – ৮ ডিসেম্বর ২০২২ সকাল ৯.৩৭ টায়