eaibanglai
Homeএই বাংলায়প্রাথমিক পর্যায়ে ওষুধ ছাড়াও মানসিক সমস্যা কাটানো সম্ভব, জানালেন বিশিষ্ট মনোবিদ

প্রাথমিক পর্যায়ে ওষুধ ছাড়াও মানসিক সমস্যা কাটানো সম্ভব, জানালেন বিশিষ্ট মনোবিদ

সঙ্গীতা চৌধুরী, বহরমপুরঃ– ডিপ্রেশন কথাটির সাথে এখন আমরা কম বেশি সকলেই পরিচিত, ডিপ্রেশন থেকে প্রচুর মানুষ নিজেদের শেষ পর্যন্ত করে দেন! মিডিয়া ও নিউজের দৌলতে সেই খবরগুলো প্রায়ই আমাদের চোখের সামনে ঘোরে, অথচ আমাদের চোখের সামনে কোন মানুষ যখন একটু সহমর্মিতার অভাবে ডিপ্রেশন ভোগেন,তখন অনেক ক্ষেত্রেই আমরা তাকে ভালো খাওয়া দাওয়া বা ঘোরার পরামর্শ দিলেও মনোবিদের কাছে গিয়ে পরামর্শ নেওয়ার কথা বলি না, কারণ এখনো আমাদের সমাজের মধ্যে অনেক ভ্রান্তি রয়েছে, যেখানে আমরা মনে করি মানসিক রোগ মানেই পাগল! মন ও মনের রোগ এই সংক্রান্ত জটিলতা নিয়েই আজ কথা হলো বহরমপুরের স্বনামধন্য মনোবিদ নির্মাল্য সাহার সাথে।

প্রশ্ন:১। বর্তমানে মুড সুইং কথাটির সাথে আমরা বিশেষ ভাবে পরিচিত,ডিপ্রেশন কথাটা তো চেনা গন্ডির সবাই বোঝেন, কিন্তু একটা সময় এই কথাগুলোর মানেই বুঝতেন না আমাদের মা কাকিমারা‌। অথচ এখনকার প্রজন্মের মানুষ কিন্তু খুব বোঝে ,ভালোভাবেই বোঝে,এর কারণ কী মনে হয় আপনার?

মনোবিদ নির্মাল্য সাহা:এর কারণ শিক্ষার প্রচার এবং প্রসার। আগেকার দিনে এসব নিয়ে কেউ আলোচনা করতো না, লেখালেখি হতো না, তাই লোকে জানতে পারতো না।

প্রশ্ন:২। আচ্ছা যে কোন রোগের ক্ষেত্রে আমরা যেভাবে ডাক্তারের কাছে ছুটি, মানসিক রোগের ক্ষেত্রে কিন্তু সেটা হয় না, অনেক ক্ষেত্রেই আমরা মনোবিদের কাছে যেতে ভয় পায়! এমনটা কেন হয়?

মনোবিদ নির্মাল্য সাহা: এর আগেই বলেছি আসলে আমাদের মধ্যে কিছু চেতনার অভাব আছে, শিক্ষার অভাব আছে যে কারণে এমনটা হয়। আসলে শরীরের মতো মনেরও যে চিকিৎসা দরকার এটা আমরা অনেকেই মানতে চাই না। অনেক তথাকথিত শিক্ষিত মানুষও মনরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। গেলেও ওষুধ খেতে চান না সাইড এফেক্টের ভয়ে। অথচ পাড়ার দোকান থেকে গ্যাসের ওষুধ বলে যেগুলো কিনে খান, তার কি সাইড এফেক্ট হয়, খোঁজ রাখেন না। একটা অদ্ভুত স্টিগমা আছে সমাজে। সাইকিয়াট্রিস্ট বা সাইকোলজিস্টের কাছে যাবো কেন? আমি কি পাগল নাকি? অথচ ফিজিসিয়ান যখন সাইকিয়াট্রিক ওষুধ লেখেন তখন তারা বুঝতেও পারেন না।

৩। আচ্ছা মানুষের মানসিক সমস্যা কি ওষুধ ছাড়া কেটে যেতে পারে?

মনোবিদ নির্মাল্য সাহা: সবসময় কাটে না। সেটা নির্ভর করে রোগের গভীরতা, পারিপার্শ্বিক প্রভাব, বংশগতি এরকম আরো অনেক ফ্যাক্টরের ওপর। মনোবিদের কাজ রোগীর ভাবনাচিন্তার গলদ খুঁজে বের করে সেটা পরিবর্তন করা শেখানো। কিন্তু যখন শারীরিক প্রভাব থাকে, তখন ওষুধ ছাড়া উপশম সম্ভব নয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে একসঙ্গে দুরকম সহায়তার দরকার পড়ে,ওষুধও খেতে হয়, সাইকোথেরাপিও নিতে হয়।

প্রশ্ন:৪। আপনার কথা অনুযায়ী বলি,তাহলে যদি মানসিক সমস্যা হচ্ছে এটি বুঝে প্রাথমিক পর্যায়েই কেউ মনোবিদের কাছে আসনে, তাহলে তো সে ক্ষেত্রে ওষুধ তো নাও লাগতে পারে?

মনোবিদ নির্মাল্য সাহা:সেটা কি ধরনের সমস্যা আগে নির্ণয় করা দরকার। আর ডিপ্রেশন কথাটার অতি ব্যবহার মানুষকে আরও ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। ডিপ্রেশন কথার অর্থ মন খারাপ নয়, অবসাদ, যার প্রভাব মন এবং শরীরে একসঙ্গে পড়ে, অনুভূতি ভোঁতা হয়ে যায়। ডিপ্রেশনের চিকিৎসা ওষুধ ছাড়া সম্ভব নয়। তবে প্রাথমিক হতাশা, উদ্বেগ, মন খারাপ, উদ্যম নষ্ট হওয়া জাতীয় লক্ষণ নিয়ে শুরুতেই কেউ যদি আসেন, তাদের ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপি খুব ভালো কাজ করে। অনেকের ক্ষেত্রে হয়তো ওষুধের দরকার পড়ে না, যদি তারা থেরাপিস্টের কথা শুনে চলেন।


RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments