সংবাদদাতা, আসানসোল:- ২৩ শে জানুয়ারি,এই দিনেই ভারতবর্ষে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ভারতের বীর মুক্তিযোদ্ধা নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। এবছর নেতাজীর জন্মবার্ষিকী ১২৭ তম বর্ষে পদার্পণ করলো। সারা দেশের পাশাপাশি সারা রাজ্য জুড়ে আজকের দিনটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হচ্ছে। আর তারই অঙ্গ হিসাবে ভারতের বীর মুক্তিযোদ্ধা নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালিত হলো পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে। এদিন আসানসোলে এস বি গড়াই রোডে অবস্থিত নিউ হিলভিউ হসপিটালের উদ্যোগে এক অভিনব কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয় নেজাজীর জন্মজয়ন্তী। প্রথমেই নেতাজীর ফোটোতে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠান চলে বিকেল পর্যন্ত। নেতাজীর জন্মবার্ষিকীতে হিলভিউ হসপিটালের উদ্যোগে আসানসোলে বিনামূল্যে মেডিক্যাল চেকআপ ও স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। এদিন এই হসপিটালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে – বোন ডেনসিটি মিসুরিং (BMD), সুগার স্পট টেস্ট, ইউরিক অ্যাসিড স্পট টেস্ট, অক্সিজেন সাটুরেশন, ব্লাড প্রেসার চেক, ফুট নার্ভ ম্যাপিং টেস্ট, ফিজিওথেরাপি ও অর্থ চেক আপ টেস্ট করা হয়। এদিন প্রায় ১২০ জন ব্যাক্তিকে এই সমস্ত টেস্ট গুলি করা হয়। পাশাপাশি এই হসপিটালের উদ্যোগে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরেরও আয়োজন করা হয়। রক্তদান মানে জীবন দান। থ্যালাসেমিয়ায় অথবা ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর পরিবার থেকে শুরু করে দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীর পরিবারের পক্ষে রক্ত জোগাড় করা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে।ঘাটতি দেখা দেয় সমস্ত ব্লাড ব্যাঙ্ক গুলোতে।এই পরিস্থিতিতে রক্তের সংকট মেটাতে এগিয়ে এলহিলভিউ হসপিটাল। সহযোগিতা করে আসানসোল লায়ন্স ক্লাব।
এই রক্তদান শিবিরে প্রায় ১৮ জনের অধিক রক্তদাতা স্বেচ্ছায় নিজেদের রক্তদান করেন। ডা: নির্ঝর মাজি নিজেও রক্তদান করেন। রক্তদান করে ডাঃ মাজি জানান আমি রেগুলার রক্তদান করি বছরের তিনবার করে। তিন মাসে একবার রক্ত দান করা প্রয়োজন কারণ তিন মাসে মধ্যে যে রক্ত দান করছে তার শরীরে নতুন করে রক্ত তৈরি হয়। সেজন্য তিন মাসে একবার রক্তদান করাই যায়। নরমাল থাকলে তিন মাসে একবার রক্তদান করা যেতেই পারে। এদিনের এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে এই হসপিটালের অন্যতম চিকিৎসক ও কর্ণধার ডাঃ নির্ঝর মাজি আরও জানান, নেতাজীর জন্মদিন বাঙালির কাছে একটা বড়ো দিন।আজ ২৩ শে জানুয়ারি নেতাজির জন্মদিন উপলক্ষে আমাদের ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে একটা ফ্রি মেডিকেল কেম্পের আয়োজন করা হয়েছে। সমস্ত বিভাগের ডাক্তাররা উপস্থিত আছেন। পাশাপাশি, রক্তদান শিবিরোধ চলছে। ইউরিক অ্যাসিড, ভিটামিন ডি, ফিজিওথেরাপ, বর্ন ক্যালসিয়াম টেস্ট এই ধরনের টেস্টগুলো আমরা ফ্রিতে করছি। আমাদের তরফ থেকে আগে যে সমস্ত পরিষেবা দেওয়া হতো সেগুলোকে আজ থেকে আরো উন্নতমানের করা হচ্ছে। আমরা গত দুই বছর থেকেই এই ক্যাম্পটি শুরু করেছি। এখানে ক্যাম্পের মাধ্যমে আমরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মেডিক্যাল চেকআপ করাচ্ছি। যাদের প্রয়োজন হচ্ছে তাদের ওষুধও দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। আমরা এখানে ডায়েট চার্টও বানিয়ে দিচ্ছি রোগীদের।এই ভাবেই আমরা আজকে নেতাজীর জন্মদিন পালন করছি।
হাসপাতালের অন্যতম কর্ণধার গৌতম পাল আজকের অনুষ্ঠানে আসা প্রত্যেককেই ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন এই ক্যাম্পের মাধ্যমে আসানসোলের অনেক সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন। পাশাপাশি এই কাজের মাধ্যমে নেতাজীর আদর্শ ও বাণী সকলের কাছে পৌঁছে যাবে।
আসানসোল লায়ন্স ক্লাবের সদস্যা কাবেরি মিত্র বলেন আমরা প্রতিবছর ২৩ শে জানুয়ারি যে প্রোগ্রামটা করেন সেই অনুষ্ঠানে আমরা প্রতিবছর যোগদান করি। আমরা বিভিন্ন জায়গায় ফ্রি চোখের ক্যাম্প করে থাকি। আমাদের রক্তদান শিবির, চোখ পরীক্ষার শিবির সহ বিভিন্ন শিবিরের আয়োজন করা হয়। প্রত্যেকটি মানুষকে ব্লাড দেওয়া খুব দরকার। বর্তমানে পেশেন্টের সংখ্যা অনেক বেড়েছে তাতে রক্তের অভাব দেখা দেয়। সেটাকে পূরণ করার জন্য সবাইকে সময় মতো ব্লাড দেওয়া প্রয়োজন।
এদিনের অনুষ্ঠানে ডা: নির্ঝর মাজি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গৌতম পাল, ডা: নির্ঝর মাজির স্ত্রী মৌমিতা মাজি ডাঃ জয়শঙ্কর সাহা, ডাঃ সূর্য শেখর সরকার, ডাঃ এসএস সরকার, ডাঃ পিএস গুপ্ত, ডাঃ এসকে বসু, ডায়টেশিয়ান তানিয়া বিশ্বাস।