সংবাদদাতা, বর্ধমান; – শনিবার বর্ধমানের কাঁকসা থেকে বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক কলেজ পড়ুয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার ঘটনায় ফের রাজ্য জুড়ে জঙ্গি মডিউল এর সক্রিয়তা সামনে আসছে বলে ইতিমধ্যেই বিজেপি অভিযোগ তুলেছে। রবিবার বর্ধমানে জেলা বিজেপি পার্টি অফিসে ঘরছাড়াদের দেখতে এসে এই বিষয়েই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে গেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “বর্ধমান থেকেই সিএএ, এনআরসির নাম করে দাঙ্গা শুরু করেছিল সিদ্দিকুল্লা। আজ সিএএ ইমপ্লিমেন্ট হয়েছে কোন নাগরিকের নাগরিকত্ব গেছে নাকি? সিএএ নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। বর্ধমানেই তো খাগড়াগড় কান্ড, বর্ধমানের খাগড়াগড় কাণ্ডে কারা যুক্ত তো জানেন। গুজরাটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রেস স্টেটমেন্ট দেখুন, একজন হিন্দু লোককে মুসলিম নাম দিয়ে তার মাদ্রাসা থেকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে, তার নাম পরিবর্তন করে দিয়েছে মাদ্রাসা থেকে। দেশবিরোধী কাজের আখড়া হয়েছে। এটা হিন্দু-মুসলমানের বিষয় নয়, এটা ভারতীয়দের সঙ্গে অ-ভারতীয়দের লড়াই। ভারতীয় মুসলিমদেরও ভেবে দেখা উচিত খাল কেটে কুমির ডেকে নিয়ে আসা হচ্ছে।” শুভেন্দু বলেন, “বাংলায় জঙ্গিদেরই তো সরকার। সিমির সাথে যুক্ত থাকা ইমরানকে রাজ্যসভায় পাঠায়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করেন যিনি সেই সিদ্দিকুল্লা রাজ্য মন্ত্রিসভায় স্থান পায়। জঙ্গিদেরই সরকার, ভদ্রলোকের সরকার নাকি? ৭২ টি জায়গায় বিএসএফকে কাঁটাতার দেওয়ার জন্য জায়গা দেয়নি মুখ্যমন্ত্রী। এই সমস্ত জায়গাগুলি ভারতের সাথে বাংলাদেশের উন্মুক্ত জায়গা যে কেউ প্রবেশ করতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২২ সালে এই জন্য মিটিংও করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে।” সোনারপুরে কাউন্সিলরের অফিসে হামলার প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “আরাবুল ইসলামকে জেল খাটালো কারা? তৃণমূলের সব জায়গাতে আছে এ টিম বি টিম, পিসি ভাইপোর টিম, যুব টিম, মাদারের টিম। জয়ন্ত নস্কর মারাই গেলেন অসুস্থ হয়ে। এই মডেল সর্বত্র আছে।”
তৃণমূল দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, নেতাদের হুঁশিয়ারী কি দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করার প্রয়াস- এই প্রশ্নে শুভেন্দু বলেন, “এরকম হলে পার্টি অফিসে এত লোক থাকতো না। বর্ধমান পশ্চিমাঞ্চলের একটা হেডকোয়ার্টার। তৃণমূল যদি ২০২১ সালের ভোট পরবর্তী হিংসা থেকে একটু শোধরাতো তাহলে এরকম অবস্থা হতো না।” অন্যদিকে, নীট পরীক্ষা কেলেংকারী সম্পর্কে এদিন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে শুভেন্দুবাবু জানিয়েছেন, “শিক্ষামন্ত্রীর এটা সাবজেক্ট।” তিনি বলছেন, “খুব কড়া ব্যবস্থা দুদিন ধরে ভারত সরকার নিচ্ছে। ভারত সরকার মেধা নিয়ে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিয়ে কোন ত্রুটি থাকুক চাননা অর্থাৎ জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলছে।” শুভেন্দুবাবু জানিয়েছেন, “সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ভারত সরকার, সিবিআই তদন্ত হলে এটাও বেরোবে, তাড়াহুড়ো করার কিছুই নেই।” এরই পাশাপাশি চাকরির দাবিতে আন্দোলনকারীরা দিদির কাছে চলো এই নামে মিছিল করায় শুভেন্দুবাবু এদিন বলেন, “আমি ওদেরকে অনুরোধ করবো নামটা চেঞ্জ করে পিসির কাছে চলো করতে।”
উল্লেখ্য, এদিন সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী জানান, “বর্ধমানে ভোট ও ফলাফল ঘোষণার পর থেকে এখনও ৭৪জন বিজেপি কর্মী, নেতৃত্ব ঘরছাড়া রয়েছেন।” তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে তিনি এদিন কথা বলেন। ঘরছাড়াদের জামাকাপড় সহ কিছু সাহায্যও এদিন দেন। তিনি জানান, “আগামী বুধবার বর্ধমানের ঘরছাড়াদের এই তালিকা নিয়ে তিনি হাইকোর্টে যাবেন।”