জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরাঃ- ছিল বিজয়া সম্মিলনী হয়ে গ্যালো বিজেপি বিরোধী প্রচার এবং একইসঙ্গে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্পর্কে সচেতন বার্তা। হবেইবা না কেন, হল ভর্তি দলীয় নেতা-কর্মীরা থাকলে তার একটা এফেক্ট তো হবেই। প্রতিটি বক্তা চাঁচাছোলা ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ করেন।
বারো মাসে তেরো পার্বণ বাঙালির অন্যতম উৎসব হলো বিজয়া সম্মিলনী। দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের পর বাঙালির ছোটদের প্রতি প্রীতি, গুরুজনদের প্রণাম ও সমবয়সীদের আলিঙ্গন ইত্যাদির মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানাবার উৎসব হলো বিজয়া সম্মিলনী। রাজনৈতিক দলগুলোর বিজয়া সম্মিলনীর লক্ষ্য হলো জনসংযোগ। মূলত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজয়া সম্মেলনীকে সামনে রেখেই গোটা রাজ্যের জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং গত ১১ ই অক্টোবর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে সেই কর্মসূচি। দলের লক্ষ্য অন্তত ৫০০ টি এই সম্মিলনীর আয়োজন করা। তারই অঙ্গ হিসাবে ১৫ ই অক্টোবর যৌথভাবে গুসকরা শহর তৃণমূল ও যুব তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিদ্যাসাগর হলে এক বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়। সম্মিলনীতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, সাংসদ অসিত মাল, স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, জেলা যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু, শহর সভাপতি দেবব্রত শ্যাম ও শহর যুব সভাপতি কার্তিক পাঁজা, প্রতিটি ওয়ার্ড কাউন্সিলার ও ওয়ার্ড সভাপতি, মহিলা, ছাত্র সহ সমস্ত শাখা সংগঠনের সভাপতি ও কর্মী এবং ভাইস চেয়ারম্যান বেলী বেগম ও চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী সহ আরও অনেকে।
উপস্থিত অতিথিদের হাতে ফুলের স্তবক তুলে দিয়ে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে তাদের বরণ করে নেওয়া হয়। এছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডের দু’-তিন জন করে পুরনো দিনের কর্মীদের সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। তদন্তের নামে প্রহসন বা হেনস্থা নয় সাংসদ অসিত মাল নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেন। রাজ্যের প্রাপ্য একশ দিনের টাকা না দেওয়ার জন্য তিনি কেন্দ্র সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। একইসঙ্গে তিনি গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান সহ প্রত্যেক কাউন্সিলারের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় শান্তভাবে তথ্য সহকারে বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলেন। কিন্তু নিজেকে শান্ত রাখতে পারেননি রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডু। তিনি বিজেপি কর্মীদের ফেলে দেওয়া চায়ের ভাঁড়ের সঙ্গে তুলনা করেন। বিজেপির বিরুদ্ধে তিনি অমানুষ, জানোয়ার প্রভৃতি কুৎসিত শব্দ ব্যবহার করেন। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য তিনি বিজেপি কর্মীদের ল্যাম্প পোস্টে বেঁধে রাখার নিধান দেন।
বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার বলেন – উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা বিরোধীদের কুৎসার জবাব দেব। একই কথা বলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। কুশল বাবু বললেন – এই সম্মিলনী কেবলমাত্র শুভেচ্ছার আদান প্রদান নয়, এর মধ্যে দিয়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হলো। পঞ্চায়েত এলাকা না হলেও আমাদের লক্ষ্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধী শক্তিকে পরাস্ত করতে হবে। শহর সভাপতি দেবব্রত শ্যাম বলেন – আজকে হয়তো আমরা পুরনো দিনের সমস্ত নেতা-কর্মীদের ডাকতে পারিনি ঠিকই কিন্তু আগামী দিনে প্রত্যেকের কাছে যাব। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কাউন্সিলার সুব্রত শ্যাম। সঞ্চালনার ফাঁকে ফাঁকে তার ছোট ছোট টিপ্পনি যথেষ্ট আকর্ষণীয় ছিল।