eaibanglai
Homeএই বাংলায়পরীক্ষার্থীর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল সিভিক ভলেন্টিয়ার

পরীক্ষার্থীর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল সিভিক ভলেন্টিয়ার

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, গুসকরাঃ- পরীক্ষা মানেই একটা মানসিক চাপ। সেই পরীক্ষাটা যদি আবার নিজের দীর্ঘদিনের পরিচিত পরিবেশের গণ্ডি পেরিয়ে অন্য বিদ্যালয়ে হয় তাহলে চাপটা একটু বেশিই হয়। তার উপর সেটা যদি জীবনের প্রথম সবচেয়ে বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক হয় তাহলে পরীক্ষার্থীদের মনে একটা চাপা টেনশন থাকে। টেনশনের চাপে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে তারা বেশ কিছু ছোটখাটো ভুল করে ফেলে। যে ভুলটা করল জেসমিন সুলতানা।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার পঞ্চম দিন। জেসমিনের বাড়ি গুসকরা পুরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের ইটেচাঁদায়। তার পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে বাড়ির পাশেই পিপিইনস্টিটিউশনে। চলার পথে নিয়মিত বিদ্যালয়টিকে সে দেখতে পায়। পরিচিত পরিবেশ। তাও পরীক্ষার চাপে নিজের অজান্তে বাড়িতে এডমিট কার্ড ফেলে আসে সে।

পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করার সময় ব্যাগের মধ্যে এডমিট কার্ডটি খুঁজে না পেয়ে গভীর হতাশায় সে ভেঙে পড়ে। এদিকে পরীক্ষার সময় আগত। বিধ্বস্ত জেসমিনকে দেখে তার সমস্যা অনুমান করতে পেরে পাশে এসে দাঁড়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রের কাছে কর্তব্যরত গুসকরা ট্রাফিক গার্ডের সিভিক ভলেন্টিয়ার সুমন কুমার যশ। জেসমিনের কাছ থেকে তার সমস্যা শুনেই নিজের কর্তব্য ঠিক করে নেয় সুমন। নিজের উর্ধ্বতন অফিসারকে বিষয়টি জানাতেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে সুমনকে কর্তব্য পালনে নির্দেশ দেন। জেসমিনকে নিজের মোটরসাইকেলে চাপিয়ে তার বাড়িতে যায় সে। অবশেষে বাড়ি থেকে এডমিট কার্ড সংগ্রহ করে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে জেসমিন। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করার সময় ধন্যবাদ জানায় ‘সুমন’ কাকু সহ অন্যান্যদের। ওরাও তাকে শুভেচ্ছা জানায়।

জেসমিনের বাবার বক্তব্য – মেয়ে বাড়িতে এডমিট কার্ড ফেলে রেখে পরীক্ষা দিতে গ্যাছে এটা আমরা জানতাম না। যদি সুমন না থাকত তাহলে মেয়ে আমার পরীক্ষা দিতে সমস্যায় পড়ত। তার সমস্ত পরিশ্রম মাটি হয়ে যেত। অসংখ্য ধন্যবাদ সুমন ও তার সঙ্গীদের।

এই বিষয়ে সুমন বিশেষ কিছু বলতে চায়নি। তার বক্তব্য – আমি শুধু আমার সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছি।

অন্যদিকে গুসকরা ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিক অনন্তদেব বাবু বললেন – সুমনরা আমাদের বাহিনীর গর্ব। মূলত তার জন্যই একটা বাচ্চা মেয়ে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় সময়মত বসতে পারল। তবে অন্যান্যদের কৃতিত্ব কম নয়। সুমনের সাময়িক অনুপস্থিতিতে তারা বুঝতেই দেয়নি।

ঘটনাটি শুনে গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল বাবু বললেন – সত্যিই খুব ভাল কাজ করেছে সুমন। পুরসভার পক্ষ থেকে সুমন সহ পুর এলাকায় কর্তব্যরত প্রত্যেক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে সম্বর্ধনা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই অন্যান্য কাউন্সিলার ও দলীয় বিধায়ক এবং পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করব।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments