eaibanglai
Homeএই বাংলায়জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত আলোচনা হলো গুসকরা পৌরসভায়

জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত আলোচনা হলো গুসকরা পৌরসভায়

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরাঃ- একটা সময় শিশুশিল্পীর কণ্ঠে শোনা যেত ‘প্রজাপতি প্রজাপতি মিলে দিও তোমার রঙিন পাখা…’, অথবা গায়ে প্রজাপ্রতি বসলে ঠাট্টা করে বলা হতো – তোর তাড়াতাড়ি বিয়ে হবে। শিশুদের সর্দি-কাশি হলে বাসক-তুলসী পাতার রস ছিল বাধ্যতামূলক। চ্যাং, শোল, লাটা প্রভৃতি আ-মাছাদের নাম বর্তমান প্রজন্ম জানেনা। আমগাছের গায়ে থাকা ছোট ছোট পোকাগুলো সংশ্লিষ্ট গাছের কি উপকার করে সেটা না জেনেই আমরা তাদের মেরে ফেলি। এইভাবেই নিজেদের অজান্তেই জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করে আমরা নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনছি।

বিশাল পৃথিবী ছোট-বড় বিভিন্ন জীবের সমাহারে গড়ে উঠেছে। এই বহুরূপতাই হল জীববৈচিত্র্য বা বায়োডাইভারসিটি। আপাত দৃষ্টিতে কিছু জীবকে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হলেও বাস্তবে প্রতিটি জীবগোষ্ঠী পরস্পর পরস্পরের উপর গভীরভাবে নির্ভরশীল। বাস্তুতন্ত্রে প্রত্যেক প্রজাতি নিজস্ব ভূমিকা পালন করে। একটি জীব প্রজাতির ধ্বংস অন্য জীবগোষ্ঠীর বিনাশের কারণ হতে পারে। এই পৃথিবীতে মানুষের বেঁচে থাকার প্রধান শর্ত হল জীববৈচিত্র্যকে বাঁচিয়ে রাখা।

শিক্ষিত-অশিক্ষিত প্রতিটি মানুষের অজ্ঞতার জন্য এই জীববৈচিত্র্য আজ ধ্বংসের মুখে। ইতিমধ্যে প্রায় ষোলো সহস্রাধিক জীব এই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অথচ বাস্তুতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য এদের প্রয়ােজন ছিল। প্রায় ৪০ বছর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জ জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব মেনে নিয়েছে।

গুরুত্ব মেনে নিয়েছে এই রাজ্যও। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে কাজ করে চলেছে।

ঠিক একইভাবে ১৮ ই জুলাই বর্ধমান জেলা কো-অর্ডিনেটর অরূপ মাজি আলোচনায় বসেন গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী সহ অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে। পুরসভার ৭ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত নিজস্ব পার্ককে কেন্দ্র করে কিভাবে বায়োডাইভারসিটি পার্ক গড়ে তোলা যায় সেই বিষয়ে সবিস্তারে আলোচনা হয়। লক্ষ্য খুব শীঘ্রই মূল প্রকল্পের কাজ শুরু করা।

অরূপ বাবু বললেন – অজ্ঞতাই আমাদের বিপদের কারণ। ইতিমধ্যে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ জীবকে হারিয়েছি। নিজেদের ধ্বংসকে ত্বরান্বিত করছি। আমাদের লক্ষ্য এখনো যেগুলো টিকে আছে তাদের যথাযথ রক্ষা করা। পাশাপাশি আমরা ছাত্র সমাজের মধ্যে সচেতনতাবোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। সবার মিলিত চেষ্টায় আবার আমরা হয়তো জীববৈচিত্র্যের কিছুটা হলেও ফিরে পেতে পারি।

অন্যদিকে কুশল বাবু বললেন – আগামী প্রজন্মের হাতে পরিচ্ছন্ন পৃথিবী তুলে দিতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রশাসন গড়ে দিতে পারে, কিন্তু রক্ষা করার দায়িত্ব সবাইকে নিতে হবে। তবেই পৃথিবী সুন্দর হবে। তিনি আরও বললেন – ব্যক্তিগত মালিকানাধীন মজে যাওয়া পুকুরগুলো কিভাবে ব্যবহার করা যায় সেব্যাপারে আমরা একটা পরিকল্পনা করেছি। আশাকরি খুব শীঘ্রই আমাদের পরিকল্পনা সফল হবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments