জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরাঃ- যতই আমরা আধুনিক হইনা কেন আজও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের সমাজের বা কখনো পরিবারের বোঝা হয়ে বেঁচে থাকতে হয়। প্রতি মুহূর্তে কটূক্তি ঝরে পড়ে তাদের উপর। জন্মগত ত্রুটির জন্য নিজেদের কোনো দায় না থাকলেও অদৃষ্টের কাছে হার মেনে বড় অসহায় বোধ করে তারা। পদে পদে লড়াই করতে হয় প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে। ‘মানি ইজ দ্য পেট্রোল অফ লাইফ’ হলেও সেটা উপার্জন করার ক্ষমতা তাদের থাকেনা বলে আরও অসহায় হয়ে পড়ে তারা।
এই পরিস্থিতিতে তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় রাজ্য সরকার। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু, নারী, পুরুষ প্রত্যেককে ১০০০ টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়ার জন্য ২০১৮ সালের ১ লা এপ্রিল চালু হয় ‘মানবিক পেনশন প্রকল্প’। যদিও এক্ষেত্রে ২০১০ সালে চালু থাকা প্রকল্পের নামের ও নিয়মের সামান্য বদল ঘটানো হয়।
এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে হলে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় শংসাপত্র নিতে হয়। কিন্তু এই শংসাপত্র নেওয়ার সময় বারবার সমস্যায় পড়তে হয় উপভোক্তাদের। অথচ গুসকরা পুর এলাকায় শতাধিক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ আছে।
তাদের সুবিধার্থে গুসকরা পুরসভার উদ্যোগে এবং পূর্ব বর্ধমান জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সহযোগিতায় মাস তিনেক আগে একটি মেডিক্যাল বোর্ডের আয়োজন করা হয়। কাউন্সিলরদের তৎপরতায় বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নরা সেখানে উপস্থিত হন। তাদের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয়। যাদের প্রতিবন্ধতার মাত্রা বেশি বা উপস্থিত থাকতে পারেনি পুরসভার উদ্যোগে তাদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ইতিমধ্যে তারা প্রয়োজনীয় শংসাপত্র পেলেও প্রাপ্য মাসিক ভাতা পাচ্ছিলনা। অবশেষে ‘মানবিক পেনশন প্রকল্প’ সংক্রান্ত কাগজপত্র এসে পৌঁছায় পুরসভার হাতে। এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২ রা মে পুরসভার পক্ষ থেকে সেই কাগজ তুলে দেওয়া হয় ১২৭ জন প্রাপকের হাতে। জানা যাচ্ছে এই বছর ১ লা এপ্রিল থেকে তারা এই ভাতা পাবে। সেই নির্দেশের কাগজ হাতে পেয়ে খুশির ঝিলিক দ্যাখা যায় প্রাপক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের চোখেমুখে।
তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী, ভাইস চেয়ারম্যান বেলি বেগম সহ প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা এবং বেশ কয়েকজন পুর আধিকারিক।
কুশল বাবু বললেন – বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের সমস্যা সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল ছিলাম। কিভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় সেটা নিয়ে দলীয় বিধায়কের সঙ্গে আলোচনা করি এবং তার পরামর্শে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সমস্ত বাধা অতিক্রম করে ওদের হাতে মানবিক পেনশন সংক্রান্ত কাগজ তুলে দিতে পেরে আমরা খুব খুশি।