জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরাঃ- ক্রিকেট বা ফুটবলের মত জনপ্রিয় খেলার দিকে যখন বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশ ছেলেমেয়ে ছুটছে ওরা তখন প্রচারের অন্তরালে থেকে ওদের কোচ পার্থসারথি পালের তত্ত্বাবধানে আত্মরক্ষার তাগিদে নীরব অনুশীলনে মত্ত। কিন্তু সফলতা কখনোই লুকিয়ে রাখা যায়না। মৃগ নাভির গন্ধের মত সেটা প্রকাশিত হবেই। অবশেষে সেটাই হলো।
গত ২৬-৩০ শে মে সুদূর তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের ইভিপি ফিল্ম সিটিতে আয়োজিত জাতীয় মুয়া থাই চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলা থেকে পঞ্চাশ জন অংশগ্রহণ করে। প্রচামুয়া থাই বর্ধমানের পক্ষ থেকে রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে গুসকরা ‘পার্থ ফাইট আর্ট’-এর ৭ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ৬ জনের হাত ধরে সাফল্যের মুখ দেখে বাংলা। বিজয়ীদের মধ্যে ৫ জন স্বর্ণ পদক ও ১ জন রৌপ্য পদক জেতে। প্রসঙ্গত ‘আটটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিজ্ঞান’ মুয়া থাই হলো আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে ‘আটটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কৌশল’।
৬৭-৭১ কেজি মহিলা বিভাগে,অনূর্ধ ২৩ বছর, স্বর্ণপদক জয় করে গুসকরা লাইন পাড়ের সুস্মিতা রায় ও ৬০-৬৩ কেজি মহিলা বিভাগে স্বর্ণপদক জয় করে কিরণ রায়। অন্যদিকে ২৪ কেজি মহিলা বিভাগে, অনূর্ধ ৯ বছর, স্বর্ণপদক জয় করে মধুমিতা মণ্ডল। ২২-২৪ কেজি মহিলা বিভাগে, অনূর্ধ ৮ বছর, স্বর্ণপদক জয় করেছে রিয়না সাউ। অনূর্ধ ৯ বছর ছেলেদের ৩৮-৪০ কেজি বিভাগে স্বর্ণপদক জয় করেছে রিদ্ধি মন্ডল এবং জানবি সাউ, অনূর্ধ ১৫ বছর, ৬০-৬৫ কেজি মহিলা বিভাগে রৌপ্য পদক জয় করেছে। সাফল্যের খবর আসতেই পাড়ায় পাড়ায় বয়ে যায় খুশির হাওয়া। উচ্ছ্বসিত অভিভাবকদের বক্তব্য – ওরা ফেরার পর আমরা আনন্দ করব।
পার্থ ফাইট আর্ট এবং মুয়া থাই বর্ধমান এর প্রধান প্রশিক্ষক পার্থসারথি পাল বললেন – এই সাফল্য গুসকরা তথা সমগ্র রাজ্যের মানুষের। একইসঙ্গে এই জয় গর্বের ও আনন্দের এবং দীর্ঘ পরিশ্রমের ফসল। আশাকরি এবার অন্তত ছেলেমেয়েরা মার্শাল আর্টের দিকে ঝুঁকবে।
গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী বললেন – এতো খুব ভাল খবর। গুসকরা তথা রাজ্যের গর্ব ছেলমেয়েগুলি চেন্নাই থেকে ফিরলে পুরসভার পক্ষ থেকে আমরা অবশ্যই ওদের সম্বর্ধনা দেব। শুধু তাই নয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে আরও বেশি সংখ্যক ছেলেমেয়ে যাতে আত্মরক্ষার তাগিদে বিভিন্ন ধরনের মার্শাল আর্ট শেখার জন্য এগিয়ে আসে তার জন্য আমাদের বিধায়ক ও সমস্ত কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করব।