eaibanglai
Homeএই বাংলায়পঁচাত্তরতম পূর্তি বছর পালিত হলো গুসকরা বালিকা বিদ্যালয়ে

পঁচাত্তরতম পূর্তি বছর পালিত হলো গুসকরা বালিকা বিদ্যালয়ে

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরাঃ- রামমোহন, বিদ্যাসাগরের হাত ধরে ধীরে ধীরে নারী শিক্ষার প্রসার ঘটতে শুরু করেছে এই বাংলায়। বেশ কিছু ভারত প্রেমী ইংরেজ একই পথের পথিক হন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে ওঠে একাধিক বালিকা বিদ্যালয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায় কোনো বালিকা বিদ্যালয় গড়ে ওঠেনি । এনিয়ে গুসকরাবাসীর মনে একটা আক্ষেপ থেকে গিয়েছিল। যতই হোক আশেপাশের এলাকায় গুসকরার একটা আলাদা পরিচিতি আছে। এসব ইংরেজ আমলের ঘটনা।

তবে গুসকরা হলো বহু কৃতি মানুষের ধাত্রীভূমি। সুতরাং এখানে কখনো আক্ষেপ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেনি। এবারও হলোনা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এগিয়ে এলেন দুই কৃতি সন্তান ডাঃ অমূল্য বসু ও ডাঃ বিজয় গড়াই। নীরবে পাশে পেলেন আরও একগুচ্ছ কৃতি সন্তানকে যাদের প্রত্যেকেই ছিলেন ‘গুসকরা গৌরব’। জমি সমস্যা মেটাতে এগিয়ে এলেন চোংদার পরিবার সহ অন্যান্যরা। অবশেষে গুসকরাবাসীর আক্ষেপ দূর করে দিনের আলোর মুখ দেখল গুসকরা বালিকা বিদ্যালয়। ১৯৪৮ সালের ১ লা মে পাঁচজন ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু হলো গুসকরাবাসীর স্বপ্নের বিদ্যালয়ের। মূলত নারীদের উন্নয়ন ছিল তার মূল লক্ষ্য এবং গত পঁচাত্তর বছর ধরে সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে।

করোনার আতঙ্ক নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠান হতে না দিলেও আবেগকে কেড়ে নিতে পারেনি। সেই আবেগকে সম্বল করে গত ১৬ ই সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ে পালিত হয়
পঁচাত্তরতম বছর পূর্তি উৎসব।

প্রাক্তন এবং বর্তমান ছাত্রী ও শিক্ষিকা, শহরের বহু কৃতি মানুষের উপস্থিতিতে ও করতালির মধ্যে দিয়ে পঁচাত্তরতম বছর পূর্তি উৎসবের শুভ সূচনা করেন বিদ্যালয়ের প্রবীণতমা ছাত্রী সুলেখা রায়। তারপর এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রী এবং শিক্ষিকারা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। উপস্থিত প্রবীণ ব্যক্তিরা করেন স্মৃতিচারণ। সবার উপস্থিতিতে সত্যিকারের মিলন মেলা হয়ে ওঠে বিদ্যালয় প্রাঙ্গন। বিভিন্ন কারণে যারা উপস্থিত থাকতে পারেননি তাদের মনে থেকে গ্যাছে আক্ষেপ। বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সূত্রে জানা যাচ্ছে আগামী বছর জানুয়ারি মাসে যে মূল অনুষ্ঠানটি হতে চলেছে সেখানে অবশ্যই তারা উপস্থিত থাকবেন। পঁচাত্তরতম বছরকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ৭৫ টি চারাগাছ রোপন করা হয়।

মাত্র বছর দু’য়েক আগে বিদ্যালয় ছেড়েছে মলি দাস। পুরনো বান্ধবী ও শিক্ষিকাদের আবার দেখতে পেয়ে বিদ্যালয় জীবনের উচ্ছলতা ধরা পড়ে তার মধ্যে। মেতে ওঠে নিজস্বী তুলতে। তার বক্তব্য – আট বছরের টান কি ভোলা যায়? অন্যান্য প্রাক্তনীদের মধ্যে একই ধরনের আবেগ দ্যাখা যায়।

বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি কুশল মুখার্জ্জী বললেন – মূল অনুষ্ঠান হবে জানুয়ারি মাসে। সময়ের অভাবের জন্য আজ হয়তো অনেককেই আমন্ত্রণ জানাতে পারিনি, কিন্তু সেদিন এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত এবং যাদের সহযোগিতার জন্য এই বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে তাদের প্রত্যেককে আমন্ত্রণ জানাব। আমরা বর্তমান প্রজন্মের সামনে তাদের অবদান তুলে ধরব। এছাড়া আরও অনেক পরিকল্পনা আছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments