জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরাঃ- কথা ছিল আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলে এই দেশেও জ্বালানি তেলের দাম কমবে। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই দেশে তেল কোম্পানিগুলো জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়। সরকারও ঘোষণা করে দেয় দাম না বাড়ালে তেল কোম্পানিগুলোর বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হবে। সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতির একটা হিসাবও দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে কেন্দ্র সরকার বিভিন্ন ধরনের কর বাড়িয়ে দিয়ে দাম একই রাখে। এরফলে কেন্দ্র সরকারের অতিরিক্ত কত আয় হচ্ছে সেটা কিন্তু কখনোই সামনে আসেনা। দাম কমার সুফল দেশবাসী উপভোগ করতে পায়না। ক্ষতি হলে সেটার পরিমাণ জনগণ জানতে পারবে কিন্তু লাভের অঙ্ক গোপন রাখা হবে এটা চরম দ্বিচারিতা। মাঝে মাঝে অবশ্য রাজ্য সরকারগুলোর প্রাপ্য অংশের ট্যাক্স কমিয়ে দিয়ে কেন্দ্র সরকার তাদের উপরই সেস কমানোর জন্য চাপ দেয়। কিন্তু তেলের উপর বিভিন্ন ট্যাক্স বাবদ কোন সরকারের কতটা প্রাপ্য সেটা স্পষ্ট না করায় এটা নিয়ে রাজনীতি হয়। রাজায় রাজায় যুদ্ধে প্রাণ যায় সাধারণ মানুষের, তারা যে দলেরই সমর্থক হোননা কেন। দিনের শেষে মূল্য বৃদ্ধির ধাক্কা তাদেরকেই সহ্য করতে হয়। কারণ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির হাত ধরে পরিবহন খরচ বাড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য খরচও বাড়তে থাকে।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ৭ ই জানুয়ারি গুসকরা শহর যুব তৃণমূলের উদ্যোগে গুসকরা শহরে এক সাইকেল মিছিল বের হয়। গুসকরা নদীপটী থেকে মিছিল শুরু হয় এবং শহরের কয়েকটি ওয়ার্ড পরিক্রমা করে মিছিল শহরের প্রাণ কেন্দ্র বারোয়রি তলায় গিয়ে শেষ হয়। কয়েকশ তৃণমূল কর্মী এই মিছিলে অংশগ্রহণ করে।
সাইকেল মিছিল মূলত যুব তৃণমূলের হলেও কার্যত শহরের সমস্ত স্তরের নেতা-নেত্রীদের মিছিলে সামিল হতে দ্যাখা যায়। স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রাসবিহারী হালদার, শহর মহিলা সভানেত্রী নন্দিতা গাঙ্গুলী, প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি এবং শহরের ছাত্র, শ্রমিক সংগঠন ও সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি, শহর যুব তৃণমূল সভাপতি কার্তিক পাঁজা, প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলার, শহর সভাপতি দেবব্রত শ্যাম, উপ-পৌরপ্রধান বেলি বেগম ও পৌরপ্রধান কুশল মুখার্জ্জী সহ অসংখ্য তৃণমূল কর্মী মিছিলে সামিল হন। বিধায়ক, উপ-পৌরপ্রধান ও পৌরপ্রধানের উপস্থিতি মিছিলে আলাদা উৎসাহ আনে।
মিছিলের শেষে বারোয়ারি তলায় অনুষ্ঠিত সভায় স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় শহর সভাপতি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন ভ্রান্ত নীতির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন গত কয়েকবছর ধরে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্র সরকার বারবার ভারতের সংবিধানের অমর্যাদা করে চলেছে।
অন্যদিকে পৌরপ্রধান বলেন – জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে শুধু তৃণমূল সমর্থকদের নয় সমগ্র ভারতবাসীর জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সুতরাং অবিলম্বে কেন্দ্র সরকারকে জ্বালানি তেলের দাম কমাতেই হবে।