জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, গুসকরা, পূর্ব বর্ধমান -: ঝাড়ু মেরে বাড়ির আবর্জনাগুলো যখন ঝেঁটিয়ে বিদেয় করা হচ্ছে তখন সেই ফেলে দেওয়া আবর্জনা দিয়ে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে উঠেছেন গুসকরার বাসিন্দা পেশায় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মশিক্ষার শিক্ষক তপন দাস। এই আবর্জনাগুলো দিয়ে তিনি তৈরি করেছেন পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের পাশাপাশি বিভিন্ন দেবদেবীর আকর্ষণীয় মূর্তি। এবার তিনি তৈরি করলেন সপরিবারে দুর্গা প্রতিমা।
নিজের ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য গত দু’বছর ধরে ফেলে দেওয়া বা পরিত্যক্ত ওষুধের স্ট্রীপ ও এক্সরে প্লেট সংগ্রহ করে গেছেন তপন বাবু। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় ওষুধের দোকানের মালিক কয়েকজন বন্ধু। এছাড়া বাড়িতে ব্যবহার করা ওষুধের স্ট্রীপ তো ছিলই। পশ্চাতপট তৈরি করার জন্য বাজার থেকে কিনে এনেছেন পিচবোর্ড ও আঠা। পরে পরমযত্নে ধৈর্য্যসহকারে ও কঠোর পরিশ্রম করে স্বল্প জায়গায় তৈরি করেন এই প্রতিমা। পিচবোর্ড ও কাগজ দিয়ে তৈরি করেন প্রতিমার পশ্চাতপট। সেটিকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য তার উপর আঠা দিয়ে ব্যবহার করা এক্সরে প্লেট বসানো হয়। পরে ওষুধের স্ট্রীপগুলো টুকরো টুকরো করে কেটে দুর্গা সহ বিভিন্ন মূর্তি তৈরি করা হয়। রঙিন স্ট্রীপ দিয়ে তৈরি মূর্তিগুলি যথেষ্ট আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। সমগ্র কাঠামোটি দর্শনীয় করে তোলার জন্য ওষুধের স্ট্রীপের উঁচু হয়ে থাকা গোল অংশগুলি একটা একটা করে বসানো হয়। খুব অল্প জায়গার মধ্যে কাঠামোটি তৈরি করার জন্য সেটি খুবই আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। আপাতত কাঠামোটি তপন বাবুর ঘরে রাখা আছে। সুযোগ পেলে পুজোর সময় দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন পুজো প্যাণ্ডেলে সেটি রাখার ইচ্ছে তার আছে। তপন বাবু বললেন, দীর্ঘদিন ধরেই ওষুধের স্ট্রীপ দিয়ে দুর্গা মূর্তি তৈরি করার ইচ্ছে তার ছিল। তারজন্য তিনি সেগুলি সংগ্রহ করতে শুরু করেন। অবশেষে মাসাধিক কাল সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করে তিনি এই কাঠামোটি তৈরি করেন। প্রসঙ্গত, পরিত্যক্ত জিনিসপত্র দিয়ে যেভাবে তপন বাবু একের পর এক নিত্য নতুন সৃষ্টি করে চলেছেন তাতে নিসন্দেহে বলা যায় রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাওয়ার তিনি একজন যোগ্য দাবিদার। এখন দেখার তার এই অভিনব সৃষ্টির জন্য সত্যিই তিনি রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান কিনা!





