নীহারিকা মুখার্জ্জীঃ- দীর্ঘদিন ধরেই পাঠদান থেকে শুরু করে সৌন্দর্যায়ন – সব ক্ষেত্রেই বৈচিত্র্যের পরিচয় দিয়ে চলেছে জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে জেলার মধ্যে তারা সেরার স্বীকৃতিও পেয়েছে। সৌজন্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা লিপিকা করণ, ধরিত্রী পুরকাইত, সবিতা মিস্ত্রী, মণিশ চক্রবর্তী, শুভাশিস হালদার, কুন্তল মণ্ডল, মৌসুমী প্রামাণিক, জয়দেব নস্কর ও প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর এর নিরলস প্রচেষ্টা। তাদের জন্যেই আরও একবার বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের দক্ষতার পরিচয় পাওয়া গেল।
পড়াশোনার পাশাপাশি সৃষ্টিশীল বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের দক্ষ করে তোলার জন্য গত কয়েক বছর ধরেই এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতের কাজে দক্ষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারই ফলশ্রুতি হিসাবে ফেলে দেওয়া ডিমের খোসা, পরিত্যক্ত কাগজ, শোলা, রঙ-তুলি ইত্যাদি দিয়ে সৃষ্টি হলো দৃষ্টিনন্দন ভারতের ম্যাপ, ফুল, ঘর ইত্যাদি। শুধু তাই নয় ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য তাদের সৃষ্টি নিয়ে বিদ্যালয়ের মধ্যেই বছরে দু’বার প্রদর্শনীও হয়।
২৩ শে আগষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এরকমই একটি প্রদর্শনী হয়। কয়েকজন অভিভাবক নিজেদের সন্তানদের সৃষ্টিশীল কাজের নমুনা দেখার জন্য উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যালয়ের সৌন্দর্যায়নের সঙ্গে মানানসই হয়ে উঠেছিল সৃষ্টিগুলি।
প্রত্যেকেই যখন তাদের সৃষ্টির প্রশংসা করছিল তখন দিয়া, অরিত্র, সমাপ্তি, তিথি, মৌবনী, সুইটি, অঙ্কিতা, শামিম, দিশা, রিশিতা প্রমুখদের চোখে-মুখে দেখা যাচ্ছিল খুশির ঝিলিক।
ফলতা সার্কেলের এস.আই (শিক্ষা) পিয়ালী বড়ুয়া বললেন- ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সত্যিই আমাদের গর্ব। সমস্ত দিক দিয়েই এই বিদ্যালয়টি তার অনন্যতার ছাপ রেখে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য এই সার্কেলের অন্যান্য বিদ্যালয়গুলিকে এগিয়ে নিয়ে আসা। তিনি এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে অভিবাদন জানান।
অন্যদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর বললেন – কেবল পুঁথিগত বিদ্যার মধ্যে আমরা শিক্ষার্থীদের আবদ্ধ রাখতে চাইনা, তাদের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভাও আমরা ফুটিয়ে তুলতে চাই। শিখন সহায়ক শিক্ষার প্রতিফলনের মাধ্যমে তাদের সেই দক্ষতা ফুটে উঠেছে। এরজন্য বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের নিরলস পরিশ্রম প্রশংসার দাবি রাখে। আমি আমার সহকর্মীদের জন্য গর্বিত।