নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুর:- দুর্গাপুর শিশু অপহরণ কাণ্ডে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত দুর্গাপুর থানার দক্ষ গোয়েন্দা বাহিনী অবশেষে নাকি অপহরণ কাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে স্থানীয় তিলক রোড বস্তি এলাকা থেকে এক গৃহবধূকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য বলে সূত্র মারফত জানা গেছে ।
পুলিশের একটি সূত্র মারফত জানা গেছে, অপহরণ কান্ডের দিন যে মোটরসাইকেলটি করে অচেনা দম্পতি শিশুটিকে অপহরণ করেছিলেন সেই মোটরসাইকেলটিকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা গেছে। ওই সূত্র মারফত আরো জানা গেছে,সম্ভবত চুরি করা মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল এই শিশু অপহরণ কান্ড ঘটানোর জন্য। পুলিশ শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তেমনটাই অনুমান করছেন বলে জানা গেছে। এদিকে চন্ডীদাস বাজার সংলগ্ন যে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো ছিল, সেই ক্যামেরাতে নাকি ধরা পড়েছে শিশু অপহরণ কাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকা মোটরসাইকেলটি সমেত এক ব্যক্তির আনাগোনা। চন্ডীদাস বাজারের একটি সিসিটিভি থেকে পুলিশ নাকি জানতে পেরেছে অপহরণ কাণ্ডে ব্যবহার করা ওই মোটরসাইকেলটির চালকের সাথে স্থানীয় তিলক রোড বস্তির এক গৃহবধূ নাকি কথাবাত্রা বলতে দেখা গেছে। স্বভাবতই পুলিশ ওই গৃহবধূকে চিহ্নিত করে কালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যায় দুর্গাপুর থানাতে। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দক্ষ গোয়েন্দা বাহিনীর আধিকারিকরা এখন ওই গৃহবধূর কাছ থেকে জানার চেষ্টা করছেন কে বা কারা কি উদ্দেশ্যে এই অপহরণ কান্ডটি ঘটিয়ে ছিল।
উল্লেখ্য, গত ১৭ই জুন রবিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের ইস্পাত নগরীর তিলক রোড ময়দান সংলগ্ন এলাকা থেকে এক দম্পতির দ্বারা অপহরণ করা হয় দু বৎসর বয়সের এক শিশু কন্যা নাম সুমিত্রা সাহু। ওই শিশুটি তখন তার দিদা ও বড় দুই বোনের সঙ্গে খেলা করছিলেন তিলক রোড সংলগ্ন ময়দানে । উপস্থিত জনতা মোটরসাইকেলে অপহরণকারীদের তাড়া করলেও তাদের নাগাল পাওয়া যায়নি। ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই দুর্গাপুর আসানসোল সহ পার্শ্ববর্তী সমস্ত থানা গুলিকে সতর্ক করা হয় এই অপহরণ ঘটনার ব্যাপারে। স্থানীয় এলাকার দোকান ও পার্শ্ববর্তী যেখানেই সিসিটিভির ছবি পাওয়া গিয়েছে তা দেখে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে দুর্গাপুর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। প্রায় ৩৬ঘন্টা পর ১৮ই জুন সন্ধ্যা সাড়ে নটা নাগাদ শরৎচন্দ্র এভিনিউ রাস্তার ধারে তিলক রোড ময়দানের কোণাতে দুটি মোটরসাইকেল এসে থামে এবং তার থেকে নাকি ওই শিশু কন্যাকে নামিয়ে তৎক্ষণাৎ চম্পট দেয় এলাকা ছেড়ে । এবারও উপস্থিত জনতা তাদের ধাওয়া করলেও শেষ পর্যন্ত অপহরণকারীরা পালাতে সক্ষম হয়। শিশু অপহরণ কাণ্ডে এই নায়া মোড় আসার ফলে রহস্য আরো ঘনীভূত হয়েছে। যদিও এলাকার বাসিন্দারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে শিশুটির উদ্ধার হওয়ার পর।
অপহরণকারীদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে ছোট্ট ওই শিশু কন্যা এখন পারিবারিক সুরক্ষায় রয়েছে। এই অপহরণ কাণ্ডে পুলিশের ভূমিকার ভুসি প্রশংসা করেছে ইস্পাত নগরীর সকল বাসিন্দা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত অপহরণকারীদের কাউকেই পুলিশ কেন গ্রেফতার করতে পারল না সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকে।