নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুর:- টানা তিন দিন বন্ধ কারখানা থেকে লোহার যন্ত্রাংশ পাচার করার পর পুলিশের জালে ধরা পড়ল তিন কুখ্যাত পাচারকারী। সোমবার ভোর রাত্রে। আটক করা হয়েছে পাচারের কাজে ব্যবহৃত একটি দামি সিডান গাড়িও। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শিল্পমহলে। থানা হস্তান্তরের অপেক্ষায় থাকা সরকারি, বেসরকারি কারখানা থেকে লোহা পাচার আসানসোল, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে নতুন কথা নয়। অতীতে বহু কারখানা লোহা পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যে সাফসুতরো ‘ডাঙ্গা’ জমিতে পরিণত হয়েছে এমন নজির ভুরিভুরি। গত সপ্তাহেই কাঁকসার একটি কারখানা থেকে লুঠ হওয়া কিছু লোহা গোপালপুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় চার লোহা পাচারকারী পিন্টু বালা, সুরেশ ঘোষ, সঞ্জয় সমাদ্দার ও আসিস হাওলাদার কে। কাঁকসার গজলক্ষী ইস্পাত কারখানা থেকে ১৭ ই আগস্ট রাত্রে তারা লোহার যন্ত্রাংশ লুঠ করেছিল। সেগুলি উদ্ধার ও হয়। গজলক্ষী’র লুঠের মাল উদ্ধার এর রেশ কাটতে না কাটতেই, দুর্গাপুরের কারখানা থেকে ফের লুঠ। এবার অঙ্গদপুরের ভাস্কর শ্রাচী ফেরো অ্যালয় কারখানায়। সম্প্রতি, উৎপাদন বন্ধ রেখে, ঐ কারখানার মালিকানা হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে। কারখানায় নেই কোন প্রহরীও। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এলাকার লোহা পাচারকারীরা গত তিনদিন ধরে অঙ্গদপুরের ভাস্কর শ্রাচী ফেরো অ্যালয় কারখানায় লুটপাট চালায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ ওই লুটপাটের ঘটনা যে পুরোপুরি পুলিশের অগোচরে হচ্ছিল তা নয় । স্থানীয়দের দাবি, কোকওভেণ থানা আর এলাকার ডিটিপিএস ফাঁড়ির পুলিশকর্মীদের একাংশ ভরপুর ঐ লুঠের বিষয়ে ‘অবগত’ ছিলেন। কিন্তু সব জেনে বুঝেও তারা ছিলেন নির্বিকার। সম্প্রতি দুর্গাপুর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অভিষেক গুপ্তার কাছে একটি সূত্র মোতাবেক দেদার লুঠের খবর পৌছতেই শুরু হয় পুলিশি অ্যাকশন। ভোর রাত্রেই ধরা পড়ে তিনজন কুখ্যাত লোহা পাচারকারী উমেশ কুশ্বাহা, সন্তোষ চৌধুরী, সারবান চৌধুরী , এরা সকলেই ডিটিপিএস ফাঁড়ি এলাকার মায়াবাজারের বাসিন্দা। ডেপুটি কমিশনার অভিষেক গুপ্তা “জানান ওদেরকে ধরা হয়েছে। আমরা আরো তদন্ত করছি” “তিনি বলেন চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি গাড়িও আমরা বাজেয়াপ্ত করেছি” ওই সিডানের নম্বর WB40AK8938 মালিক ধৃত সারবান চৌধুরী। গত বছর সেপ্টেম্বরে সে ওই গাড়িটি কেনে। পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানাচ্ছে কারখানা থেকে লোহার লুঠের ব্যাপারে কাঁকসা, দুর্গাপুর, নিউ টাউনশিপ, কোকওভেণ থানা এলাকার জোরদার রেড চালানো হবে।