eaibanglai
Homeএই বাংলায়জবরদখলের ফাঁদে পড়ে তাপসের মতো বেকায়দায় কি এবার কবি দত্ত নিজেও?

জবরদখলের ফাঁদে পড়ে তাপসের মতো বেকায়দায় কি এবার কবি দত্ত নিজেও?

মনোজ সিংহ, দুর্গাপুর: জবরদখলের বিরুদ্ধে সরাসরি হুংকার দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সোমবারের বৈঠকে কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের সমস্ত পুরসভা, নগরোন্নয়ন সংস্থাগুলিকে। সেই ধাক্কায় আদৌ কি শোধরাবে দুর্গাপুরের পুলিশ, প্রশাসনিক আমলা, পূরকর্তা বা স্বশাসিত সংস্হার গয়ংগচ্ছ মনোভাব, নাকি দুদিনের লম্ফঝম্ফ দেখিয়ে ‘ দিদির’ কাছে ফার্স্টবয় সেজে তারপর টেবিলের তলা দিয়ে হফতা বাড়িয়ে ফের যে কে সেই!

বহিরাগতরা গুছিয়ে বসেছে বিশেষত: শহরের সিটিসেন্টার, বেনাচিতি জুড়ে গত সাত বছরে। এতো ঢালাও সরকারি জমি দখল করে মাসে দু -পাঁচ লাখ টাকার বাণিজ্য করার নজির আগে এতটা দেখা যায়নি। মাঝে, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্হা (এ ডি ডি এ) র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তাপস ব্যানার্জি শহরের সিটিসেন্টার, বিশ্বকর্মা নগর, বিধাননগরের কিছু এলাকায় জবরদখল উচ্ছেদের কাজ শুরু করলেও, তার নিজের দলের এবং প্রভাবশালী বেওসায়ী, পুলিস এবং কিছু আমলার অসহযোগিতায় থেমে যেতে হয় তাকে। তাই, তার দপ্তরের ২০ গজের মধ্যেই এখনও রয়ে গেছে ঢালাও ফলের বাজার, দপ্তরের এক কিলোমিটারের মধ্যেই আজও বুকফুলিয়ে সরকারি জমি পকেটে পুরে দেদার বেওসা চালিয়ে যেতে পেরেছে একটি ব্রান্ডেড হোটেল, পেট্রোল পাম্প লাগোয়া একটি রেস্তোরাঁ, বা স্মার্ট বাজারের সামনে লুঠ হয়ে গেছে প্রধান সড়ক। এমনকি, রাজ্য সরকারি সংস্থার জমি জবরদখল করেই শহরের মামড়া এলাকায় দেদার চলছে কোটি কোটি টাকার মুরগি ফার্মের ঢালাও করবার।

মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সোমবার জবরদখলের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে হুঁশিয়ারি দেন, “কে নেতা, কে মন্ত্রী, কে ডিএম, কে প্রভাবশালী দেখার দরকার নেই। দরকার হলে আমার বাড়ি থেকেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করুন। এসব মানবোনা কোনো অজুহাতেই।”

দুর্গাপুরে নিশ্চয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ে বড় এমন কোনো প্রভাবশালীর বসবাস নেই, যিনি সরকারি জমি জবরদখল করে থাকলেও হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হবে শহরের পুলিশ প্রশাসনকে। “এটাই এবার প্রমাণ করতে হবে দুর্গাপুরকে। বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা বেঁধে নিশ্চিন্তে বসেবসে কেও সরকারি জমি চিবিয়ে খাচ্ছেনাতো সবার নজর এড়িয়ে বা প্রশাসনের নাকের ডগায়? বিশেষ করে যারা সরকারি পদ আলো করে বসে আছেন, আগে তাদের স্বচ্ছতা আনা আসু দরকার,” বলে দাবি কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর।

মাত্র হপ্তা খানেক আগে তাপস ব্যানার্জীকে সরিয়ে এডিডিএ’র চেয়ারম্যানের চেয়ার দখল করেন শহরের নামী হোটেল ব্যাবসায়ী কবি দত্ত। চেয়ারে বসেই তিনি ঘোষণা করেন, “কোনো ভাবেই জবরদখল মানবোনা। সরকারি জমি উদ্ধারের লাগাতার কাজ শুরু হবে।” তিনি জোরের সাথে বলেন, “যে জমির কাঠা পিছু দাম এখন ৬০থেকে ৭০ লক্ষ টাকা, সেই জমি দখল করে বছরভর এভাবে ব্যবসা করা কি মেনে নেওয়া যায়!” তাপসকে হঠাতই থামতে হয়েছিল। এবার খোদ মূখ্যমন্ত্রী নিজেই উচ্ছেদের ময়দানে, কবি দত্ত কি পারবেন ঘর, শহর স্বচ্ছ রাখতে উচ্ছেদে এগিয়ে যেতে? নাকি, এতো চেনা পরিচিতের শহরে এমন অপ্রিয় কাজে নেমে শেষে ফাঁদে পড়ে যাবেন তীক্ষ্ম বুদ্ধির কৌশলী কবি নিজেও?

কবির সত্যিই কতটা একশন, কতটা ইমোশন – উত্তর দেবে সময়, অপেক্ষায় থাকবে শহর থেকে সম্ভবত রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী নিজেও!

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments