নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ লোকসভা ভোটের পারদ চড়ছে পুরোদমে। দ্বিতীয় দফার ভোটে রাজ্যে অশান্তির বাতাবরণ প্রত্যক্ষ করেছে রাজ্য। তারমধ্যে রায়গঞ্জ, দার্জিলিং-র চোপড়ায় ভোটের দিনে অশান্তি ছাড়িয়েছে লাগামছাড়া। সবকিছু প্রত্যক্ষ করে আসন্ন তৃতীয় দফা বা বাকি দফার ভোট প্রক্রিয়ার পরিস্থিতি কেমন থাকবে তা হয়তো সময়ই বলবে, কিন্তু বাকি দফার ভোটগুলিতেও যে রাজ্যে অস্থিরতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে সেকথা বলাই যায়। এরই মধ্যে কাঁকসায় দুষ্কৃতিদের হাতে বিজেপি কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার খবরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। জানা গেছে, শুক্রবার কাঁকসার গোপালপুরে বিজেপির স্ট্রিট কর্নারে হামলা চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতি। বিজেপি কর্মীদের ঘেরাও করে একদল দুষ্কৃতি লাঠি, রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় রক্তাক্ত হয়েছেন তিনজন বিজেপি কর্মী। বিজেপির তরফে ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা জড়িত বলে আঙুল তোলা হয়েছে। বর্তমানে ওই তিনি বিজেপি কর্মী দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতদের নাম জয়দেব সরকার, নবকুমার দাস, রথীন অধিকারী। এদিকে দুষ্কৃতিদের হাতে দলীয় কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে শনিবার সকালে আহত বিজেপ কর্মীদের সঙ্গে দেখা করলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। শনিবার প্রচার পর্ব শুরুর আগেই কাঁকসার গোপালপুরে গতকাল দুস্কৃতিদের হাতে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করতে যান তিনি। সেখানে আহত বিজেপি কর্মীদের মনে সাহস দিয়ে তিনি জানান, তিনি নিজেও অনেকবার মার খেয়েছেন, গোটা শরীরে ক্ষতের চিহ্ন। এর জবাব মানুষ ভোট বাক্সে দেবে বলে জানান তিনি। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া কাঁকসার বিভিন্ন এলাকায় ভোটপ্রচার সারেন। একদিকে যখন ভোটের মুখে সন্ত্রাসের আবহ সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যজুড়ে তখন ভোট চলাকালীন নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে সোচ্চার হলেন ভোট কর্মীরা। রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা হারিয়ে ভোট কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবীতে বিক্ষোভে নামলেন দুর্গাপুরের “ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি” কলেজে প্রশিক্ষণরত ভোটকর্মীরা। শনিবার এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুক্ষণ প্রশিক্ষণের কাজে বিঘ্ন ঘটে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ভোটকর্মীরা, এবার সেই বিক্ষোভের আঁচ শিল্পাঞ্চলেও। জানা গেছে, শনিবার NIT কলেজে প্রশিক্ষণরত কর্মীরা তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন তাদের জন্য নিরাপত্তার কি বন্দোবস্ত করেছে তা জানতে চাইলে তার সদুত্তর না পেয়ে প্রায় কয়েকশো ভোটকর্মী কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে কাজ বন্ধ করে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাদের বক্তব্য, প্রত্যেক বার বিভিন্ন বুথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হাতে আক্রান্ত হতে হয় ভোটকর্মীদের। তাই রাজ্য পুলিশ নয়, প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছেন তারা। একই দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকার ভোট কর্মীরাও। শনিবার ভোট কর্মীরা দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণের আগে শহরের কলেজ মোড়ে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিইয়ে স্লোগান দিয়ে মিছিল করেন। এরপর তারা বিষ্ণুপুর মহকুমা শাসকের দপ্তরে গিয়ে মহকুমাশাসক মানস মণ্ডলের হাতে তাঁদের দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি তুলে দেন। ভোট কর্মীদের দাবী, গত পঞ্চায়েত ভোট ও রাজ্যে সদ্য সমাপ্ত দু’দফার লোকসভা ভোটে ভোটকর্মীদের অভিজ্ঞতা খুব ভালো নয়। লোকসভা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক এখনও নিখোঁজ। রাজ্যে ভোটের মুখে চলা এহেন পরিস্থিতিতে ভোটকর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলে জানান। তাই রাজ্য পুলিশে আস্থা হারিয়ে তারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানিয়েছেন।