সন্তোষ মণ্ডল,কাঁকসাঃ– এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃতদেহ নিয়ে ধুন্ধমার কাণ্ড বেঁধে গেল কাঁকসার ক্যানেল পাড় এলাকা। দেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি ঠিকাদারের উপর চড়াও হয় মারমুখি জনতা। পরে অবশ্য কাঁকসা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় বেঙ্গালুরুতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন কাঁকসার ক্যানেলপারের বাসিন্দা সতীশ মন্ডল( ৩৩)। এলাকারই এক ঠিকাদার রবি সরকার তাকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে ওই কাজ দেয়। গত কালীপুজোয় বাড়িতেও এসেছিলেন সতীশ। ছুটি কাটিয়ে যোগ দিয়েছিলেন কাজে। এরইমধ্য়ে গত রবিবার ঠিকাদার রবি সরকার সতীশের বাড়িতে ফোন করে জানায় শনিবার সতীশের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ বার বার ঠিকাদারকে দেহ পাঠানোর আবেদন জানালেও তিনি টাল বাহানা করতে থাকেন। এতে সন্দেহ বাড়তে থাকে। মৃতের স্ত্রী ও পরিবারের দাবি সতীশকে কোনো কারণে খুন করা হয়েছে। সতীশের ফোনটিও পাওয়া যায়নি। পুরো বিষয়টি জানিয়ে ও দেহ নিয়ে আসার আবেদন জানিয়ে অবশেষে চারদিন পর গত বুধবার কাঁকসা থানার দ্বারস্থ হয় মৃত সতীশের স্ত্রী ও পরিবার। সেই আবেদনের ভিত্তিতে পুলিশ দেহ আনার ব্যবস্থা করে। শনিবার বিমানে করে দেহ আনা হয় কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরে। সেখান থেকে ঠিকাদার রবি সরকারের তত্ত্বাবধানে দেহটি কাঁকসায় আনা হলে ঝামেলা শুরু হয়।
মৃতদেহ নিয়ে এলাকায় ঢোকার মুখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকার বাসিন্দা ও পরিবারের সদস্যরা। মৃতের স্ত্রী জ্যোৎস্না মন্ডল, বৌদি শুক্লা মন্ডল ও পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন পুনরায় দেহ ময়নাতদন্ত করতে হবে। কারণ তারা বিভিন্ন সূত্র মারফত জানতে পেরেছেন, সতীশকে খুন করা হয়েছে। বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে যে ময়নাতদন্ত হয়েছে তা তারা মানতে নারাজ। পাশাপাশি তারা ঠিকাদার রবি সরকারকে গ্রেফতারের দাবি জানাতে থাকেন। এমনকি এলাকার মানুষেরা ঠিকাদারকে মারার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কাঁকসা থানার পুলিশ এবং উত্তেজিত ও মারমুখী জনতার হাত থেকে কোনমতে ওই ঠিকাদারকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশের আশ্বাসে কফিন বন্দি সতীশের দেহ বাড়িতে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। এরপরে গোটা এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।