eaibanglai
Homeএই বাংলায়সার কিনতে গিয়ে লক্ষী পুজোয় কোটিপতি কাটোয়ার দিনমজুর এখন থানায়

সার কিনতে গিয়ে লক্ষী পুজোয় কোটিপতি কাটোয়ার দিনমজুর এখন থানায়

নিজস্ব প্রতিনিধি, কাটোয়া: একেই কি বলে লক্ষ লাভ? অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে এক হতভাগ্য দিনমজুর হেলায় লটারির টিকিট কেটে, আচমকাই কোটিপতি হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কাটোয়ার এক গ্রামে, তাও আবার লক্ষ্মীপুজোর দিনেই!

কোটিপতি হয়েই সেই দরিদ্র কৃষক এখন লক্ষ্মী আগলাতে টিকিটটি বগলদাবা করে সটান পুলিশের দারস্থ হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিনমজুর এখন পুলিশি প্রহরায় বালিশের তলায় টিকিট রেখে নিশ্চিন্তে নিদ্রা দিচ্ছেন নাক ডাকিয়ে। আউশগ্রাম থানার ছোড়া পুলিশ ফাঁড়িতে। তার দেখভালের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে একজন সিভিক পুলিশ ভলেন্টিয়ারকেও।

দিনদুপুরে লটারিতে কোটিপতি বনে যাওয়া কাটোয়ার ডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা বামাচরণ মেটে এখন নিশ্চিন্ত। তার কোটি টাকার গুপ্তধন আর কেউই ছিনতাই করতে পারবেনা।

পেশায় দিনমজুর বামাচরনের নিজের একফালি জমি রয়েছে ডাঙ্গাপাড়ায়। সেখানে তিনি কষ্টে সিস্টে অল্পসল্প চাষও করে থাকেন। তার কথায়, “ফসলে দেওয়ার জন্য সার কিনতে স্ত্রীর দেওয়া ১০০ টাকায় আচমকা আমার ভাগ্য বদলে দিয়েছে।” তিনি জানান, পূজো বলে এদিন সারের দোকান বন্ধ থাকায় সেই টাকা থেকে ৬০ টাকা দিয়ে সোমবার সকালে দুটি টিকিট কাটেন বামাচরণ। কষ্টের টাকায় লটারীর টিকিট কেটে ফেলায় স্ত্রীর কাছে সকাল সকাল জোটে বিস্তর ধমক। মুখবুজে হজম করেন বামা।

আর ঠিক তারপরই আচমকা পালাবদল। বুধবার দুপুরে খেতে বসে ফোনে টিকিট মেলাতে গিয়ে বামাচরণের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। তার টিকিটে প্রথম পুরস্কার পড়েছে!! এটা যেন তার ঠিক বিশ্বাসই হচ্ছিলনা। স্ত্রী কদম মেটেকে বিষয়টি জানালে তিনিও বিষয়টি তাচ্ছিল্যের হাসিতে উড়িয়ে দেন। দুবার,তিনবার, চারবার, বারবার মেলালেও চোখ কচলে গাঁয়ের মজুর বামাচরন দেখেন – কোনো ভুল নয়, তার হাতে ধরা ওই টিকেটের নম্বরই প্রথম পুরস্কারের চিহ্নিত নম্বরটি। স্ত্রী কদম একগাল হেসে বললেন, “কি করি বলুন? আমরা গরীব মানুষ। লটারীর টিকিট কেটে এভাবে পয়সা নষ্ট করা কি আমাদের সাজে? মা লক্ষ্মী বোধহয় আমার কষ্ট বুঝে তার পুজোর দিনেই এভাবে পুরস্কার দিলেন!” হাঁক ছেড়ে দরাজ গলায় ডাকলেন প্রাণের ভাইপোকে। এরপর কাকা ভাইপো সলাপরামর্শ করে বুঝলেন, দিনকাল ভালো নয়, যখনতখন এই মহার্ঘ্য টিকিটটি ছিনতাই হয়ে যেতে পারে। অতএব, সোজা থানায় যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। তার টাকা আগলাবে পুলিশ।

তাই, হঠাৎ কোটিপতি হয়ে টিকিটের নিরাপত্তার জন্যই তিনি ঘন্টা খানেকের মধ্যেই ভাইপোকে নিয়ে থানায় চলে আসেন। পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন জানান বামাচরণ। আর তার আবেদনে সাড়া দেওয়ায় তিনি পুলিশকে প্রসংশায় ভরিয়ে দেন। বামাচরণের ইচ্ছা ৫০ লক্ষ টাকা সঞ্চয় করে রাখার পাশাপাশি বাকি টাকায় নিজেদের বাড়িটি দোতলা তৈরি করা এবং বিঘে দুয়েক জমি কেনা। আর ছেলে মেয়ের দাবি মতো তাদেরকে তিনি এবার কিনে দেবেন নতুন দুটি সাইকেল। এমনই চিন্তাভাবনা রয়েছে বামাচরণ মেটের। জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস বলেন, “দুশ্চিন্তাগ্রস্তকে নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের কর্তব্য। তাই, ওনাকে এখন পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে।”

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments