নীহারিকা মুখার্জ্জী,কলকাতাঃ- আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসকে সম্মান জানিয়ে গত কয়েক দিন ধরে গোটা রাজ্য জুড়ে চলছে বাঁধন ছাড়া উত্তাপ। সকাল ৯টা বাজতে না বাজতেই তাপমাত্রা পৌঁছে যাচ্ছে ৪০°সেঃ। এদিকে এগিয়ে আসছে’কাব্যতরী’ পত্রিকার প্রকাশ ক্ষণ। সমস্ত আয়োজন শেষ। স্বাভাবিক ভাবেই গভীর উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটছিল ‘কাব্যতরী’ সাহিত্য পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তথা প্রাণপুরুষ প্রবীর চৌধুরীর। অবশেষে আন্তরিকতার আড়ম্বরের মধ্যে দিয়ে গত ৪ ঠা জুন কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের ‘বর্ণপরিচয়’ বিল্ডিংয়ের সভাঘরে উপস্থিত অতিথিদের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ ঘটল ৯৮ জন কবি-সাহিত্যিকের সৃষ্টি সমৃদ্ধ ‘কাব্যতরী’ সাহিত্য পত্রিকার বৈশাখী সংখ্যা। এরমধ্যে বাংলাদেশের অসীম সাহা, অঞ্জনা সাহা, হাসান মঞ্জু, রাজিয়া সুলতানা পিংকি, ড.নাঈমা খাতুনের মত খ্যাতনামা কবির লেখা লেখা স্থান পেয়েছে। এছাড়াও এবারের সংখ্যায় সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত সাহিত্যিক তপন বন্দোপাধ্যায়ের একটি কবিতা আছে। বই প্রকাশকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হয় এক সুন্দর ও আকর্ষণীয় সাহিত্যানুষ্ঠান।
অনুষ্ঠান শুরুর সময়টা ছিল দিবা ভাগের চতুর্থ প্রহর। প্রচণ্ড গরমকে উপেক্ষা করে তার অনেক আগে থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রানের উচ্ছ্বাসে ও গভীর আন্তরিকতায় সাহিত্যকে ভালবেসে স্বরচিত কবিতা ও গানের ডালি নিয়ে হাজির হন সাহিত্য প্রিয় শতাধিক কবি-সাহিত্যিক। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে তাদের যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে বরণ করা হয়।
স্বরচিত গদ্য ও পদ্য পাঠ এবং সাহিত্য বিষয়ক ভাবগম্ভীর অথচ মননশীল আলোচনা অনুষ্ঠানটিকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। প্রবীণদের পরামর্শে সমৃদ্ধ হন নবীনরা। খালি গলায় শান্তা চ্যাটার্জ্জীর সঙ্গীত শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন পত্রিকা সম্পাদক স্বয়ং।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিগমানন্দ মন্ডল, শঙ্খচুর চক্রবর্তী, পিনাকী বসু, সুধাংশু বিকাশ সাহা, সাহিত্যিক দিলীপ রায় সহ আরও অনেকেই। এছাড়াও ছিলেন ‘কাব্যতরী’ পত্রিকা গোষ্ঠীর একাধিক কবি-সাহিত্যিক।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে সম্প্রতি রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহকে উপেক্ষা করে সাহিত্যের টানে দূর দূরান্ত থেকে যেভাবে কবি-সাহিত্যিকরা ছুটে এসেছেন তার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ‘কাব্যতরী’ পত্রিকা সম্পাদক প্রবীর বাবু বললেন – আজ সত্যিই খুব আনন্দের দিন। বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি-সাহিত্যিকদের উপস্থিতিতে সভাগৃহ হয়ে উঠেছিল সত্যিকারের মিলন মেলা। আশাকরি আগামীদিনেও এদের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন প্রতিভাদের পাশে পাব ।