জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,কলকাতাঃ- যতই পেশাদার বলা হোক আমরা সবাই মানুষ। তারপরও দেশ ও খেলার প্রতি চরম আনুগত্য দেখিয়ে পিতার অন্তেষ্টি ক্রিয়া শেষ করেই শচীন তেণ্ডুলকর ফিরে গেছেন খেলার মাঠে। ব্যাট হাতে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে করেছেন সেঞ্চুরি। ঠিক একইভাবে সাহিত্য জগতে চরম ‘ডেডিকেশন’ দেখা গেল ‘সংশপ্তক’ পত্রিকার সম্পাদক শোভন ব্যানার্জ্জীর মধ্যে।
তার মা অসুস্থ- জীবন মরণের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন। এদিকে পত্রিকা প্রকাশের দিন এগিয়ে আসছে। অনেক শুভানুধ্যায়ী তাকে দিন বদলের পরামর্শ দিলেও শোভন রাজী হয়নি।
অবশেষে সব সংশয় দূর করে গত ১৫ ই অক্টোবর উত্তর কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজের কাছে অবস্থিত ‘ধরভিলা’ হলে প্রায় শতাধিক কবি-সাহিত্যিকের উপস্থিতিতে দিনের আলোর মুখ দেখে ‘সংশপ্তক’-এর দ্বিতীয় বর্ষের শারদীয়া সংখ্যা। পত্রিকাগোষ্ঠী আশাবাদী ভিন্ন স্বাদের কবিতায় ভরপুর বইটি এবারও পাঠকের কাছে সমাদৃত হবে। বইটির প্রচ্ছদ অঙ্কন করেছে বিশিষ্ট শিশু শিল্পী স্রোতস্বিনী ভট্টাচার্য এবং ব্যাক কভার সেজে উঠেছে অন্য ছয় জন শিশু শিল্পীর তুলিতে। প্রসঙ্গত ২০২০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসের পুণ্য দিনে যাত্রা শুরু করে ‘সংশপ্তক’ এবং অল্প সময়ের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বৈজয়ন্ত রাহা, দিলীপ রায়, জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় ও নিগমানন্দ মণ্ডল এবং সংশপ্তক পত্রিকা গোষ্ঠীর সহ সম্পাদিকা পিয়ালী ভট্টাচার্য্য, সভাপতি সোমা মুখার্জী, অনন্যা গাঙ্গুলী, শম্পা ঘোষ, সঙ্গীতা ভদ্র কর্মকার, উমা চৌধুরী ও কৃষ্ণা চক্রবর্তী সহ অন্যান্য সদস্যরা। এর আগে উদ্বোধনী সঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন সংশপ্তক এর প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক শোভন ব্যানার্জ্জী। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে প্রতিটি অতিথিকে বরণ করে নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত কবিরা স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। প্রবীণ কবিরা কাব্য সাহিত্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং কাব্যচর্চায় মনোনিবেশ করার জন্য নবীন প্রতিভাদের উৎসাহিত করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রত্যেক কবির হাতে তুলে দেওয়া হয় শারদ স্মারক, সার্টিফিকেট, সৌজন্য পত্রিকা ও মেমেণ্টো। পুজোর পর শারদ সংখ্যা প্রকাশিত হওয়ায় একইসঙ্গে সবাই মিলে মিষ্টিমুখ করে বিজয়া সম্মেলনী সেরে ফেলা হয়।
শোভন বাবু বলেন – এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। হয়তো কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি থেকে গেছে। এরজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।