জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,কলকাতাঃ- গত ১২ ই জুন ভোর ৩ টা নাগাদ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত সচিব লীনা চক্রবর্তী গোলপার্কের নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
পার্থিব পৃথিবীতে জন্ম-মৃত্যু স্বাভাবিক ঘটনা হলেও লীনা দেবীর বিষয়টি ছিল কিছুটা আলাদা। ‘গণদর্পণ’-এর মরণোত্তর অঙ্গদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত লীনা দেবী ২০০০ সালের ২৭ শে সেপ্টেম্বর মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার পত্রে স্বাক্ষর করেন। উনার একমাত্র সন্তান, বর্তমানে মুম্বাই নিবাসী, রাজশ্রী চক্রবর্তী গণদর্পণের সম্পাদক মণীশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মায়ের মৃত্যু সংবাদ জানান এবং উনার মা যে মরণোত্তর অঙ্গদানের অঙ্গীকার করে গেছেন সেকথা স্মরণ করিয়ে দেন।
মুম্বাই থেকে রাজশ্রী বাবু কলকাতায় ফেরার পর মণীশ বাবু ১৩ ই জুন সন্তানের উপস্থিতিতে লীনা দেবীর দেহ নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজের এনাটমি বিভাগের কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন। সেইসময় রাজশ্রী বাবু ছাড়াও তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
রাজশ্রী বাবু বললেন – জন্ম যখন হয়েছে মৃত্যু তখন হবেই। কিন্তু মায়ের অঙ্গ পেয়ে বহু অসহায় মানুষ হয়তো পৃথিবীর রূপ, রস, গন্ধ উপভোগ করতে পারবেন এবং মৃত্যুর পরেও আমার মা তাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।
মণীশ বাবু বললেন – লীনা দেবীর মত মানুষেরা যত বেশি মরণোত্তর অঙ্গদানের জন্য এগিয়ে আসবেন তত বেশি অসহায় মানুষদের উপকার হবে। তাদের দেখে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ উৎসাহিত হবে। একইসঙ্গে চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় অনেক সুবিধা হবে। সময়মত খবর দেওয়ার জন্য তিনি রাজশ্রী বাবুর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। গণদর্পণের পক্ষ থেকে মণীশ বাবু উনার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।