রিমা ঘোষ, কলকাতা -: ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ দীর্ঘসূত্রতা। ‘তারিখের পর তারিখ’ শব্দবন্ধনী কার্যত প্রবাদে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে আছে আইনজীবীদের পেছনে বিপুল খরচ। পরিস্থিতি বদলের জন্য প্রচলিত আদালত ব্যবস্থার বাইরে বেরিয়ে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ১৯৮৭ সালে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা হিসেবে লোক আদালত চালু হয়।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিম্ন আদালতগুলিতে নিয়মিত জাতীয় লোক আদালতের বেঞ্চ বসে। ধীরে ধীরে লোক আদালতের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। সুপ্রিম কোর্টের পরিচালনায় কলকাতা হাইকোর্টের মিডিয়েশন এবং কনিসলিয়েশন কমিটি দ্রুত মামলার নিস্পত্তি ঘটাতে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। বাদী-বিবাদী পক্ষের কোন খরচ ছাড়াই জমি-জায়গা সংক্রান্ত মামলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক মামলা, দাম্পত্য মামলা ইত্যাদির দ্রুত নিস্পত্তি করছেন কলকাতা হাইকোর্টের মিডিয়েশন এবং কনসিলিয়েশন কমিটির নিযুক্ত মিডিয়েটররা। কলকাতা হাইকোর্টের পাশাপাশি নিম্ন আদালতের ৭২ টি বিকল্প বিবাদ নিস্পত্তি কেন্দ্রে বসে মিডিয়েশন পর্ব। মিডিয়েটররা বাদী-বিবাদী দু’পক্ষকে নিয়ে শুনানি করে এবং দু’মাসের মধ্যে মামলাগুলির চুড়ান্ত রিপোর্ট জারি করা হয়। গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের নেতৃত্বে ‘এডভোকেট’ ও ‘নন এডভোকেট’ মিডিয়েটরদের শংসাপত্র দেওয়া হয়। অন্যান্যদের সঙ্গে ‘নন এডভোকেট মিডিয়েটর’ হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আইনি সংবাদদাতা ও কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের মিডিয়েশন কমিটির প্যাট্রন বিচারপতি সৌমেন সেন, সভাপতি বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি মধুরেশ প্রসাদ, বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ সহ অন্যান্য বিচারপতিরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কমিটির সদস্য সচিব সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের অরিজিনাল সাইডের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (লিগ্যাল) এবং মিডিয়েশন কমিটির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ড. শুভাশিস মুহুরি জানান – কলকাতা হাইকোর্টের মিডিয়েশন এবং কনসিলিয়েশন কমিটি জমে থাকা মামলার চাপ কমাতে কলকাতা হাইকোর্ট সহ রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে মিডিয়েটর নিযুক্ত করেছে। তাদের হাতেই শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে মিডিয়েশন কমিটির অফিস স্টাফ মহম্মদ নৌশাদ, আকবর আলী, মৌসুমি মন্ডল প্রমুখ গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।





