সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী),বহরমপুরঃ– আচ্ছা যিনি আমাদের আরাধ্য দেবতা যিনি আমাদের ভগবান তিনি কি কখনো দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে খাবার কিনে খেতে পারেন? কি মনে হয় আপনাদের? নাহ তাইতো? চলুন আজ আপনাদের অনেক বছর আগে বৃন্দাবনের বাঁকে বিহারী মন্দিরের একটি সত্য ঘটনার কথা বলবো, যে সত্য ঘটনা শুনলে আপনারা শিহরিত হয়ে উঠবেন।
বৃন্দাবনের বাঁকে বিহারী মন্দিরের পূজারী প্রত্যেক দিন পুজো দিয়ে রাত্রের দিকে বাড়ি ফিরতেন। কিন্তু বাড়ি যাওয়ার আগে তিনি নিকটবর্তী মিষ্টান্ন দোকান থেকে প্রতি রাত্রে চারটি করে লাড্ডু এনে গোপাল ঠাকুরের পাশে রেখে দিতেন, যাতে গোপালের ক্ষুধা পেলে সে খায়।
একদিন পূজারীর কোন কারনে একটু ভুল হয়ে গিয়েছিলো তাই তিনি লাড্ডু না দিয়ে চলে গেলেন। গোপাল ঠাকুর সেই রাত্রে নিজেই নিজের লাড্ডু কিনতে বেরিয়ে পড়লেন দোকানে। একটি ছোট্ট শিশুর রূপ ধরে তিনি দোকানের সামনে গিয়ে হাজির হলেন।
দোকানদারও অনেক রাত পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলেন যে, পূজারী আসবেন এবং লাড্ডু নিয়ে যাবেন। কিন্তু পূজারী আর না আসায় তিনি দরজা বন্ধ করে বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করেন। এমন সময় দোকানী দেখলেন যে, ছোট্ট একটি শিশু তাঁর কাছে দোকান খোলার জন্য বায়না করছে, বাধ্য হয়ে দোকানী দরজা খুললেন। তারপর সেই শিশুটি গুণে গুণে চারটি লাড্ডু নিল। দোকানদার বললেন-“পয়সা তোমার বাবার কাছ থেকে কাল নিয়ে নেব।” তখন বালকটি বলল-“না, আমার হাতের একটা কঙ্কন খুলে দিচ্ছি, এটা নিন।” দোকানদার নিতে না চাওয়ায় জোর করে কঙ্কন দিয়ে আসলো গোপাল।
এর পরদিন সকালে পূজারী মন্দিরে এসে দেখেন- গোপালের হাতে একটি কঙ্কন উধাও আর বিছানায় লাড্ডু পড়ে আছে,অন্য সকল গহনা আছে। তখন পূজারীর চেঁচামেচিতে সকলের সাথে ওই দোকানীও আসে আর সে এসে রাতের সব ঘটনা খুলে বলে কঙ্কনটাও ফিরিয়ে দেয়। তখন পূজারী নিজের ভুল বুঝতে পারেন। তাঁর মনে পড়ে যে, তিনি গত রাতে নিত্যদিনের মতো গোপালকে লাড্ডু দিয়ে যাননি।