এই বাংলায়, নিউজ ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনের মাস তথা এপ্রিল মাস ঢুকে গেছে। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই লোকসভা নির্বাচন শুরু হয়ে যাবে। তাই শেষমুহূর্তের প্রচারে ফাঁকি রাখতে নারাজ শাসক বিরোধী কোনও দলই। কোথাও হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী ও তারকা প্রার্থীদের সামনে রেখে ভোটপ্রচার আবার কোথাও প্রার্থী স্বয়ং জনগণের দরবারে গিয়ে ভোটপ্রচার গত দিন ১৫ ধরে এই ছবিই এখন রাজ্যের স্বাভাবিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই যেমন বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী ব্লকে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা। ভোটপ্রচারের প্রথম দিন থেকেই কোনও খামতি রাখছেন না তিনি। সকাল থেকেই নির্বাচনী প্রচারে বেড়িয়ে পড়েছেন। চৈত্র মাসের প্রচণ্ড রোদও দমাতে পারেনি তার প্রচার অভিযানকে। সোনামুখী ব্লকের রাধামোহন পুর অঞ্চলের বিস্তৃর্ণ এলাকায় পায়ে হেঁটেই সমস্ত মানুষের বাড়ই বাড়ি গিয়ে প্রচার সারলেন সঙ্গে বয়স্কদের আশীর্বাদ গ্রহণ তো আছেই। বিষ্ণুপুরের পাশাপাশি ভোট প্রচারে পিছিয়ে নেই বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ডা: সুভাষ সরকারও। জন সংযোগকে হাতিয়ার করে জোরদার প্রচারে নেমে পড়েছেন তিনিও। বাঁকুড়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার চালানোর পাশাপাশি লাড্ডু হাতে সকলকে মিষ্টি মুখ করাতেও ছাড়লেন না তিনি। একদিকে যখন ভোট প্রচারকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের মধ্যে চরম ব্যস্ততা তখন তৃণমূল কংগ্রেসের দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়ার অভিযোগ উঠল খোদ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দেয় দুর্গাপুরের ২৪ নং ওয়ার্ডের গনতন্ত্র কলোনী এলাকায়। জানা গেছে নির্বাচন কমিশনের একটি গাড়ি পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় টহল দিচ্ছিল। সেইসময় সেখানে বেশ কয়েকটি বাড়ীতে তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতার সমর্থনে দেওয়াল লিখনের কাজ চলছিল। নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকগন বাড়ীর মালিকদের কাছ থেকে দেওয়াল লিখনের অনুমতি পত্র দেখতে চাইলে তারা আধ ঘন্টা সময় চান বলে জানা গেছে। অভিযোগ, সময় না দিয়েই নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা প্রায় ১০ টি দেওয়াল মুছে দেয়। এই নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বচসা বেঁধে যায় ওই আধিকারিকদের। অভিযোগ এরপরেই নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা গাড়িতে চেপে চলে যায়। ঘটনায় গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখার্জী। তিনি জানান, কমিশনে গোটা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাবেন তিনি। অনুমতি থাকা সত্বেও কেন এমন হল তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নামের আড়ালে কেউ যদি এমন করে থাকে, তাহলে তা একেবারেই ঠিক নয়। একই ঘটনা কাঁকসার বান্দ্রা এলাকাতেও। সেখানে সিপিএমের দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ গতকাল রাতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা স্থানীয় সিপিআইএম নেতা বিরেশ্বর মন্ডলের নামের ৮টি দেওয়াল মুছে দিয়েছে। সিপিআইএম নেতা বিরেশ্বর মন্ডলের অভিযোগ, গতকাল তাদের কর্মীরা বামুনারা অঞ্চলে পার্টি অফিস খুলতে গেলে তাদের কর্মীদের মারধর ও বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা সমরেশ ব্যানার্জি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সবমিলিয়ে ভোট প্রচারের নানান কৌশল, অভিযোগ, পাল্টা-অভিযোগ সমস্ত কিছু নিয়েই লোকসভা ভোট এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।