সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- এই প্রসঙ্গে মার্কেন্ডেয় পুরাণের শ্রী শ্রী চণ্ডীর একাদশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, “ইত্থং যদা যদা বাধা দানবোত্থা ভবিষ্যতি। তদা তদাবতীর্যাহং করিষ্যাম্যরিসংক্ষয়ম্॥” অর্থাৎ যখনই দানবগণের প্রাদুর্ভাববশত বিঘ্ন উপস্থিত হবে তখন তখনই আমি আবির্ভূতা হয়ে দেব-শত্রু অসুরগণকে বিনাশ করবো। এছাড়া দেবী ভাগবত মহাপুরাণের পঞ্চম স্কন্ধের অষ্টাদশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে- মহিষাসুরকে দেবী বলছেন,“যদা যদা হি সাধুনাং দুঃখং ভবতি দানব।তদা তেষাং চ রাক্ষার্থং দেহং সন্ধারয়াম্যহম্।।অরূপায়াশ্চ মে রূপমজন্মায়াশ্চ জন্ম চ।সুরাণাং রক্ষনার্থায় বিদ্ধি দৈত্য বিনিশিচতম্। ”অর্থাৎ – হে দানব , যখন যখন সাধুপুরুষদের জীবনে দুঃখ ঘনিয়ে আসে, তখন তখন তাদের রক্ষা করার জন্যেই আমি দেহ ধারণ করি। হে দৈত্য ! বাস্তবে আমি নিরাকার এবং অজন্মা, তবুও দেবতাদের রক্ষার জন্য আমি সাকার রূপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করি।
অর্থাৎ যখন যখন ধর্মের বিনাশ হয় যখন যখন অসুররা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, তখন তখন ধর্মের উদ্ধার করবার জন্য সাধু পুরুষদের উদ্ধার করবার জন্য দেবী নিরাকার থেকে সাকার রূপ গ্রহণ করে জন্মগ্রহণ করেন। অদ্ভুতভাবে গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই একই কথা বলেছেন অর্জুনকে, তিনিও বলেছেন, যখনই ধর্মের অধঃপতন হবে এবং অধর্মের অভ্যুত্থান হবে তখন সাধুদের উদ্ধার করবার জন্য পাপীদের বিনাশ করবার জন্য এবং ধর্মের পুনঃস্থাপন করবার জন্য আমি আবির্ভূত হব!- দেবীর বলা কথা এবং ভগবানের বলা কথার মিল কিন্তু অদ্ভুত নয় আসলে এর দ্বারা বোঝা যাচ্ছে সেই আদি অনন্ত সত্যের কথা। যিনি নারায়ণ তিনি নারায়ণী, যিনি মহাকাল তিনি মহাকালী আবার যেই কৃষ্ণ সেই কালী! কৃষ্ণকালী অভেদ তত্ত্ব- আমরা থাকি দুর্গার রূপে ভজন করি অথবা কৃষ্ণ রূপে, সেই এক দিকেই আমাদের যাত্রা… হরে কৃষ্ণ। জয় দুর্গা।





