সংবাদদাতা কলকাতা:- গতকাল বিধানসভা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধিবেশন শেষে নিশ্চিত জয়ের হাসি চোখে মুখে লক্ষ্য করা গেল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতা বালা ঠাকুরের চোখে মুখে। গতকাল বিধানসভার অন্তরে প্রায়ই তার জয় নিশ্চিত বলে ধরে নিয়েছেন ওয়াকিবহুল মহল। এদিন পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সহ তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব ও অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের একাধিক কর্মকর্তারা বিধানসভার অন্তরে গিয়ে মমতা বালা ঠাকুর কে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। একটি অসমর্থিত সূত্রের মারফত জানা গেছে এদিন বিধানসভাতে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতা বালা ঠাকুরের রাজ্যসভা মনোনয়ন এর পর জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।
লোকসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়তেই ফের নতুন করে এনআরসি নিয়ে রাজনীতির সানাই বাজাতে শুরু করেছে বিজেপি। মূলত মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের ভোটকে পকেটবন্দি করতেই বিজেপি এই চাল চেলেছে বলে মনে করছে তৃণমূল। গত পাঁচ বছর এনআরসি নিয়ে কোনরকম উচ্চবাচ্য করেনি কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। ভোট আসতেই ঠান্ডাঘরে পাঠিয়ে দেওয়া এনআরসি-র ফাইল ধুলো ঝেড়ে বের করেছে বিজেপি।এমনকি নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নানান বিভান্তিকর তথ্য সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে মানুষের মনে নতুন করে ভীতির সঞ্চার করতে চাইছে কেন্দ্র। এ ব্যাপারে পশ্চিম বঙ্গের কয়েক কোটি মতুয়া ভক্তের মনে ভরসা জোগাতে ইতিমধ্যেই পথে নেমেছেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এ নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান সহ বিভিন্ন জেলায় রাজনৈতিক আন্দোলন কর্মসূচির ডাক দিতে চলেছেন মমতাবালা দেবী। উল্লেখ্য,মাত্র কয়েক দিন আগেই তাঁকে রাজ্যসভার নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দেবার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।ঠাকুর বাড়ির এই প্রবীণা জানান, ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসি-র তীব্র বিরোধীতা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন,গত ৫০-৬০ বছরেরও বেশী সময় ধরে যাঁরা এ দেশে বসবাস করছেন, বিগত প্রায় সমস্ত নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন, তাঁদের আবার নতুন করে নাগরিকত্বের পরীক্ষা দিতে হবে কেন? তাঁরা কি এতদিন এ দেশের নাগরিক ছিলেন না? তাহলে যাঁরা তাঁকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হতে সাহায্য করেছেন, তাঁদের ভোট অবৈধ ছিল ? সেই অবৈধ ভোট নিয়ে যাঁরা ক্ষমতায় রয়েছেন, তাহলে তাঁরাও তো অবৈধ বলে দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ব্যাপারে রাজ্য জুড়ে তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছেন মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর।
তাঁর নির্দেশকে সামনে রেখে পশ্চিম বর্ধমান জেলা মতুয়া মহাসংঘের সভাপতি বিশিষ্ট আইনজীবী সঞ্জীব কুন্ডু বলেন, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে এনআরসি-সিএএ ধুয়ো তুলে মতুয়া সম্প্রদায়ের মনে ভীতির সঞ্চার করেছিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। পাঁচ বছরে মতুয়াদের উন্নয়নের জন্য কিচ্ছুটি করেনি কেন্দ্র। আবার ভোটের মুখে এনআরসি নিয়ে নাটক শুরু করেছে মোদি সরকার। সঞ্জীব বাবুর দাবি, কেন্দ্র কী ভাবছে, বারবার ঘুঘু এসে ধান খেয়ে যাবে ? এ ব্যাপারে তাঁরা রাজ্য জুড়ে তীব্র গণআন্দোলনে সামিল হবেন বলে জানান মতুয়া মহাসংঘের এই নেতা।