জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান:- ক্ষুদিরামের মত বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে এসেছিল দেশের স্বাধীনতা। এক তিলোত্তমা তার মা-বাবার কোল খালি করে দিয়ে চিরবিদায় নিলেও হয়তো তার জন্যেই আর কোনো নারী নৃশংস নির্যাতনের শিকার হবেনা। বাস্তবে যদি এটা হয় তিলোত্তমার প্রতি সেটাই হবে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন। মূলত আরজি করের নৃশংস ঘটনার পরেই নারীদের নিরাপত্তার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে রাজ্য সরকার তথা পুলিশ প্রশাসন। নারীর নিরাপত্তার জন্য রাজ্য সরকার দশ দফা নির্দেশের বাইরেও আরও কয়েকটি নির্দেশ দিয়েছে। গড়ে উঠেছে ‘রাত্রির সাথী’। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য রাজ্যের সব থানা এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও জোর কদমে সাজানো হচ্ছে। এলাকার মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য সক্রিয় হয়ে উঠেছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরা। মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য নামানো হয়েছে নারী ‘শক্তি’ বাহিনীকে।
এসিপি ঈপ্সিতা দত্ত ও আসানসোল মহিলা থানার ওসি স্নেহন্বিতা মন্ডলের নেতৃত্বে পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে হীরাপুর থানা এলাকায় ‘নারী নিরাপত্তা সচেতনতা কর্মসূচি’ পালন করা হয়। সঙ্গে ছিল নারী ‘শক্তি’ বাহিনীর সদস্যরা। তারা হীরাপুর থানা এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা, চিত্রা সিনেমা মোড়ের কাছে গ্যালাক্সি মল ঘুরে দেখেন। কথা বলেন সেখানে আসা বিভিন্ন মহিলা ক্রেতাদের সঙ্গে। মন দিয়ে তাদের সমস্যার কথা শোনেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। বিপদে পড়লে তাদের সাথে যোগাযোগ করবার পরামর্শও দেন। মল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেন।
শুধুমাত্র পরামর্শ দিয়েই তার কর্তব্য শেষ করেনি। যোগাযোগের জন্য তারা দুটি মোবাইল নম্বরও দিয়েছে। একটি হলো ‘নারী শক্তিবাহিনী’-র নম্বর: ৯১৪৭৮৮৯৪২৫ এবং অপরটি হলো মহিলা হেল্পলাইন ‘অভয়া’-র নম্বর: ৯১৪৭৮৮৯৪৩১.
পুলিশ আধিকারিকদের আশা এই দুটি নম্বর পেয়ে এলাকার মহিলারা অনেক বেশি আশ্বস্ত হবে এবং নিজেদের নিরাপদ বোধ করবে।
প্রসঙ্গত, এলাকায় মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য এই নারী শক্তি বাহিনী তৈরি করা হয়েছে। এই বাহিনীর বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলা সদস্যরা কালো পোশাক পরে স্কুটি নিয়ে এলাকায় এলাকায় ঘুরে বেড়াবে। কোনো মহিলা বিপদে পড়লেই তারা কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
পুলিশের এই উদ্যোগে খুব খুশি এলাকাবাসী। তাদের বক্তব্য স্কুল, কলেজ সহ যেসব এলাকায় মেয়েরা বেশি যায় সেখানে যদি এই বাহিনীর সদস্যরা থাকেন তাহলে মেয়েদের বাইরে পাঠিয়ে আমরা অনেক বেশি নিশ্চিন্তে থাকতে পারব। তবে আমাদের উচিত ওদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।