জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, মঙ্গলকোট, পূর্ব বর্ধমান-: বাজার বনকাপাশি মিত্র সংঘের উদ্যোগে এবং বাসন্তী কলাকেন্দ্রের সঙ্গীত শিল্পী, কালীমাতা ড্যান্স অ্যাকাডেমির নৃত্য শিল্পী ও স্থানীয় কয়েকজন কচিকাচা পরিবেশিত সঙ্গীত ও নৃত্য রাতের রঙিন আলোর মত রাঙিয়ে তুলল মঙ্গলকোটের বাজার বনকাপাশি গ্রামের বাসিন্দাদের। একইসঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কার কালো মেঘ কাটিয়ে সবার মনে নিয়ে এল খুশির রাত। বিষণ্নতা কাটিয়ে দুর্গাপুজোর নবমীর রাত হয়ে উঠল আনন্দের উৎস।
অনুষ্ঠান শুরু হয় তিতলি, আরোহী, আরাধ্যা, মনীষা প্রমুখের নৃত্যের মাধ্যমে। বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী তৃণা মুখার্জ্জী পরিবেশিত একটি সঙ্গীতের পর এক অসাধারণ দৃশ্যের সাক্ষী থাকার সুযোগ পায় উপস্থিত দর্শকরা। নৃত্য শিক্ষিকা পায়েল চক্রবর্তী রচিত স্ক্রিপ্টে বর্তমান সমাজের একটুকরো জীবন্ত দলিল নৃত্যের মাধ্যমে তুলে ধরলেন প্রীতি, পূজা, বুদ্ধ ও অঙ্কিতা। ভাষ্যপাঠে ছিলেন পায়েল নিজেই। সত্যিই এটি ছিল একটি অসাধারণ দৃশ্য। এরপর একে একে দীপিকা, রাইমা প্রমুখদের নৃত্য উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে।
একইভাবে প্রিয়া, শিল্পা, ঈশান, অঙ্গনা, জয়শ্রী, শ্রেয়া, গোপাল প্রমুখদের পরিবেশিত সঙ্গীত যথেষ্ট উপভোগ্য হয়ে ওঠে। সঙ্গীত শিল্পী তৃণার সঙ্গীত দর্শকরা প্রাণভরে উপভোগ করে। দর্শকদের অনুরোধে তাকে আরও কয়েকটি সঙ্গীত পরিবেশন করতে হয়।
সঙ্গীত ও নৃত্য দিয়ে সাজানো অনুষ্ঠানটি প্রায় চারঘণ্টা ধরে চললেও কখনো দর্শকদের বিরক্তি উৎপন্ন করেনি। উল্টে হাততালি দিয়ে তারা শিল্পীদের উৎসাহ দিয়ে গ্যাছেন। একটা সময় তৃণার সঙ্গীতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দর্শকরা মঞ্চের সামনে নৃত্য করতে শুরু করলেও সেটা কখনোই অশালীন হয়ে ওঠেনি। এলাকাবাসীরা এক সুস্থ সংস্কৃতির নজির সৃষ্টি করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা এক বিরল দৃষ্টান্ত।
ক্লাব সম্পাদক অসিত রায় বললেন, বিভিন্ন কারণে মাঝখানে দু’একবার বন্ধ থাকলেও গত ত্রিশ বছর ধরে স্থানীয় শিল্পীদের উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি সুস্থ সংস্কৃতি বজায় রাখার জন্য দুর্গাপুজো ছাড়াও বছরে অন্তত দু’বার করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকি। এই অনুষ্ঠানে স্থানীয়দের সঙ্গে অন্য এলাকার শিল্পীরাও অংশগ্রহণ করে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।