জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,মঙ্গলকোটঃ- আজ আর হয়তো সেই ঐতিহ্য নাই। একটা সময় ১লা বৈশাখ এলেই কলকাতা ময়দান সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ফুটবল প্রিয় জায়গায় শুরু হয়ে যেত সাজ সাজ রব। সকাল থেকে কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ক্লাবের প্রাক্তন ও সম্ভাব্য বর্তমান খেলোয়ার এবং সমর্থকদের ভিড় হতো ক্লাব তাঁবুতে। বিভিন্ন ক্লাবে ‘বার’ পুজো হতো এবং নতুন করে বার বসানো হতো। ধীরে ধীরে সেই রেওয়াজ কলকাতা শহর ছাড়িয়ে জেলা শহর অতিক্রম করে পৌঁছে যায় গ্রামে। তারই একটুকরো নমুনা পাওয়া গ্যালো পশ্চিম মঙ্গলকোটের গণপুর ফুটবল ময়দানে। সৌজন্যে গণপুর নরেন্দ্র স্মৃতি ফুটবল ক্লাব।
গ্রাম বাংলা থেকে যখন খেলাধুলা বিদায় নিতে চলেছে তখন গত কয়েকবছর ধরে অতীতের বিশিষ্ট ফুটবলার প্রেমানন্দ মুখার্জ্জীর তত্ত্বাবধানে একগুচ্ছ আদিবাসী ছেলেমেয়ে ফুটবল অনুশীলনে মত্ত হয়ে পড়েছে। তাদের জন্যেই প্রবল উন্মাদনার সঙ্গে গণপুর ফুটবল ময়দানে হলো বারপুজো। একইসঙ্গে মহিলা ফুটবলারদের নতুন জার্সি উন্মোচন।
১ লা বৈশাখ সাত সকালেই খেলার মাঠে হাজির হয় সোম, রবি, রাজেন, দেবানন্দ, দীপক, কল্যাণী, পূর্ণিমা, মেনকা, লতিকা, রূপালী, রাণী প্রমুখ। হাতে ফুল সহ পুজোর অন্যান্য সামগ্রী। সঙ্গে ফুটবল ও নতুন জার্সি। আর ছিল ওদের কোচ প্রেমানন্দ মুখার্জ্জী। নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হন পুরোহিত। শুরু হয় ‘বার’ পুজো। ওরা তখন সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে। পুজোর শেষে পুরোহিত নিজেই একটি নতুন জার্সি তুলে দেন লতিকার হাতে। এরপর একে একে সবার হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন জার্সি। খুশিতে মেতে ওঠে প্রত্যেকে।
ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর কিশোরী মেনকা বলল- সত্যিই আজ খুব আনন্দ হচ্ছে। হাতে পেলাম নতুন জার্সি, সঙ্গে বারপুজো। খুশিতে মেতে উঠল ওরা।
প্রেমানন্দ বাবু বললেন – ওদের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য মাঠে আসি। খেলার উপযুক্ত সরঞ্জাম ওদের নাই। কিছু সহৃদয় ফুটবল প্রেমী মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ওদের হাতে নতুন জার্সি তুলে দিতে পারলাম। সত্যিই খুব ভাল লাগছে।