সঙ্গীতা চ্যাটার্জী:- আমাদের অবচেতন মনের ভাবনা থেকে অনেক সময় স্বপ্নের সৃষ্টি হয়। কিন্তু তাই বলে কি স্বপ্নের কোন মানে নেই? এমনটা কিন্তু নয়। অনেক সময় দেখা যায় আমরা যা কিছু স্বপ্ন দেখি তার গভীর অর্থবহ মানে আছে। যেমন একবার একজন ভক্ত স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজকে জিজ্ঞেস করেছিলেন,
“স্বপ্নে লাল জবাফুল দেখি। কিছু দিন আগে স্বপ্ন দেখলাম গাছের নীচে মা তারা আর আমি প্রণাম মন্ত্র বলে যাচ্ছি। এ কীসের ইঙ্গিত?” এই প্রশ্নের উত্তরে স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ বলেছিলেন, “সম্ভবত দীক্ষা নেবার ইঙ্গিত। দীক্ষা নিয়ে সাধনা করতে বলা হচ্ছে আপনাকে, মনে হয়। আপনি বিভিন্ন আশ্রমে যান, নানান মহাত্মাকে দেখুন ও কথা বলুন। যাকে ভাল লাগবে তার কাছে দীক্ষা নিতে পারেন। এ নিয়ে তাড়াতাড়ি করবেন না। অনেককে দেখে নিজেই গুরু বাছুন।” অর্থাৎ মহারাজ সবসময় বলেছেন দীক্ষার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো নয়, অনেক গুরু দেখে ভাবনা চিন্তা করে তবে দীক্ষা।
এতো গেল স্বপ্নের মধ্যে স্পষ্ট কিছু দেখার কথা কিন্তু অনেক সময় স্বপ্নের মধ্যে আমরা এমন অনেক ছবি দেখি যা সব সময় মাথায় থাকে না, কিন্তু তারও কি অর্থ থাকে?
অন্য এক ভক্ত একবার স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “ঘুমের মতো আচমকা কোনো ঢুলুনিতে এমন কিছু ভেসে ওঠে যার সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। কোনো বাণী বা ছবির মতো ঘটনা। মুহূর্তে সেটা ভেঙেও যায়। এটা কি?” স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ বলেন, “কোনো কারণে হঠাৎ অতিচেতন বা বিশ্ব চেতনের সাথে ক্ষণিকের জন্য যোগাযোগ হয়ে যাওয়া। কবি, বিজ্ঞানী, দার্শনিক প্রমুখের এমন হয় কখনো কখনো। কবির মনে এমন রূপকল্প বা শব্দ ভেসে ওঠে যা তিনি আগে কখনো ভাবেননি। বিজ্ঞানী দেখতে পান অজানা কোনো রহস্য। আর দার্শনিকের মনে নতুন চিন্তা ওঠে। এটা স্বপ্নেও হয়। এটা ভাল লক্ষণ। এই সময়ে যে ছবি বা বাণী ভেসে ওঠে তা লিখে রাখবেন। পরে এ নিয়ে চিন্তা করলে নতুন নতুন আইডিয়া পাবেন।”